জনপদ হিসেবে প্রাচীন হলেও এখনো মজবুত হয়নি জেলার ব্যবসা-বাণিজ্য আর অর্থনীতির ভিত। যোগাযোগ ব্যবস্থায় পিছিয়ে থাকা এ অঞ্চলকে এগিয়ে নিতে আগামীর সরকারের কাছে কৃষিভিত্তিক শিল্প কারখানা গড়ে তোলার দাবি ভোটারদের।
২ হাজার ১৭৯ দশমিক ২৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের জেলা গাইবান্ধাকে বিভক্ত করা হয় সংসদীয় পাঁচটি আসনে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই পাঁচ আসনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ২০ লাখ ৫১ হাজার ৭৫৩ জন ভোটার।
সবশেষ অর্থশুমারি অনুযায়ী, এ জেলায় ১ লাখ ৫১ হাজার ৫২টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থাকলেও এগিয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী এই অঞ্চলে ব্যবসা, বাণিজ্য অর্থনীতিতে গতি না আসার পেছনে যোগাযোগে পিছিয়ে থাকাই কারণ বলছেন ভোটাররা। ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক থেকে বেশ দূরে সদর, সাঘাটা, ফুলছড়ি ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার অবস্থান। তাই এখনো পকেট শহরের গ্লানি বয়ে বেড়াচ্ছে গাইবান্ধা জেলা শহর।
স্থানীয়রা বলেন, ‘আমরা এখানে একটা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও একটি কারখানা চাচ্ছি। এছাড়া এই এলাকার যেন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়।’
খাদ্যাভাবে এক সময় মঙ্গার জনপদ বলে পরিচিত থাকলেও এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ কৃষি নির্ভর অর্থনীতির এ জেলার ব্যবসা-বাণিজ্যের অগ্রগতিতে বড় অন্তরায় হিসেবে দেখা হচ্ছে শিল্প-কারখানার অনুপস্থিতি। স্থানীয়রা আরও বলেন, ‘গাইবান্ধার মানুষকে বাঁচানোর জন্য এখানে একটি কৃষিভিত্তিক অঞ্চল গড়ে তোলার জোর দাবি জানাচ্ছি। এবং রংপুর চিনিকল আবারও চালু করা হোক।’
গাইবান্ধার সবক'টি আসন মিলে পুরুষ ভোটার আছে ১০ লাখ ১১ হাজার ১৪ জন। আর সংখ্যায় এগিয়ে নারী ভোটার আছেন ১০ লাখ ৪০ হাজার ৭১৯ জন। মোট ভোটারের একটা অংশ জুড়ে আছে শিক্ষার্থী ও তরুণ ভোটার। যারা এবারই প্রথম ব্যালটে সিল দিয়ে নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।
এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আগামীর সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ তারা যেন শিক্ষা ব্যবস্থাটা আরেকটু উন্নতি করেন। আর শিক্ষিত বেকারদের যেন একটা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়।’
১৯৮৪ সালে জেলা ঘোষণা হলেও বেশ প্রাচীন এ জনপদ। কেননা ১৮৭৩ সালে রংপুরের কালেক্টর ইজি গ্লেজিয়ার প্রণীত প্রতিবেদনে উল্লেখ ছিলো ঘাঘটপাড়ের গাইবান্ধার কথা। কিংবদন্তি আছে পাঁচ হাজার বছর আগে মৎস্য দেশের রাজা বিরাটের রাজধানী ছিল গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে।