সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের পরই শুরু হয়ে গেছে প্রার্থীদের প্রচারণা। এরইমধ্যে শহরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর ছবি ও প্রতীক সংবলিত পোস্টার দেখা গেছে।
রাজনৈতিক দলের এসব পোস্টারের আঁতুড়ঘর রাজধানীর প্রেসপাড়া খ্যাত ফকিরাপুল ও আরামবাগ এলাকায়। এখানকার ছাপা মেশিনগুলো অবিরাম চলছে। শুধু এ এলাকা নয়, কাঁটাবন ও নীলক্ষেতের বিভিন্ন ছাপাখানায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মুদ্রণ শ্রমিকরা। যেন ব্যানার, পোস্টার ও লিফলেট ছাপানোর ধুম পড়ে গেছে।
শ্রমিকরা বলেন, 'নির্বাচন আসলেই আমাদের কাজ বেড়ে যায়। আমরা বিভিন্ন প্রার্থীর পোস্টার-লিফলেট ছাপানো শুরু করেছি। আগামী দুই সপ্তাহে আমাদের ব্যস্ততা আরও বাড়বে।'
বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশেও কাগজ-কালির দাম বেড়েছে। তাই নির্বাচনের আগে পোস্টার ছাপানোর খরচও বেড়েছে।
প্রেস মালিকরা বলেন, কাগজ-কালির মান ও ছাপার পরিমাণের ওপর নির্ভর করে দাম নির্ধারণ করা হয়। ১৮/২৩ মাপের প্রতিটি পোস্টার ছাপাতে খরচ পড়ছে সাড়ে ৪ টাকা থেকে ৫ টাকা। ১৫/২০ আকারের প্রতিটি পোস্টার ছাপাতে ২ টাকা ৭৫ পয়সা লাগছে। এছাড়া ৭/১০ আকারের প্রতিটি লিফলেট বানাতে ২ টাকা পর্যন্ত খরচ হচ্ছে।
নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত মুদ্রণকাজে মুখর থাকে ছাপাখানা। ভোটের প্রচার শুরুর পর এই ব্যস্ততা কয়েকগুণ বেড়েছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন প্রার্থীদের ক্রয় আদেশ আসছে। তবে ছাপার খরচ বেড়ে যাওয়ায় লাভের হিসাব করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
রিয়েল প্রিন্টার্সের স্বত্বাধিকারী আকতার হোসেন বলেন, 'প্রতি বছরই এ সময় কাজের চাপ থাকে। এবার নির্বাচনের কারণে কাজের চাপ আরও বেড়েছে। তবে খরচ বেড়ে যাওয়ায় আগের মতো লাভ করা সম্ভব হয় না।'
মুদ্রণ শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার সময় থেকে ধুঁকছে এই শিল্প। করোনা মহামারির আগে দেশের মুদ্রণ শিল্পের বাজার ছিল প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার। নানান সংকটে তা নেমে এসেছে ৬ হাজার কোটি টাকায়। তবে আসন্ন নির্বাচনী হাওয়া মুদ্রণ শিল্পকে দোলা দিচ্ছে।
বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক চেয়ারম্যান শহীদ সেরনীয়াবাত বলেন, 'নির্বাচনে পোস্টার-লিফলেটের গুরুত্ব একটুও কমেনি। ডলার সংকট, বিভিন্ন কাঁচামালে বাড়তি শুল্ক আরোপ চিন্তার কারণ হলেও নির্বাচনের আগে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হবে।'