কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম পিয়ারাতলী। যেখানে নারীদের উচ্চশিক্ষার পথে রয়েছে নানারকম প্রতিবন্ধকতা। সেই গ্রামেই নারীদের হাতে তৈরি হচ্ছে মোবাইল। পড়াশুনায় খুব দূর যেতে না পারা মেয়েদের কর্মসংস্থান হয়েছে হালিমা টেলিকমের মোবাইল কারখানায়। দক্ষ হাতে চলছে এলসিডি, লেন্স, ডেট লেভেলসহ ফোন তৈরির নানা ধাপ।
১৭শ’র বেশি শ্রমিকের রুটি রুজির যোগান হয়েছে এখানে। কর্মদক্ষতায় নারী ও পুরুষের সম্মিলিত অংশগ্রহণে প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনের কাজ এগিয়ে চলছে পুরোদমে।
মোবাইল উৎপাদনকারীরা বলেন, ‘এলইডি ফিটিং, ওয়েট ফিটিং,শোল্ডারিং, কিউসিসহ অনেক ধরনের কাজ করি। আমরা অল্প পড়াশোনা জানা মেয়েরা এখানে কাজের সুযোগ পেয়ে আনন্দিত।‘
মাত্র ৩ হাজার টাকায় তরুণ বয়সে ব্যবসার শুরু । মোবাইলের সিম বিক্রি, দোকানে দোকানে ফোন-চার্জার বিক্রি করতেন আবুল কালাম হাসান টগর। এক পর্যায়ে টাকা জমিয়ে চীন সফর করেন টগর।
ফেরার পথে নিয়ে আসেন মোবাইল যন্ত্রাংশ তৈরির উপাদান। শুরুতেই নানা প্রতিবন্ধকতা আসলেও দমে যাননি এই উদ্যোক্তা। বাজারে জনপ্রিয়তা পেতে থাকে হালিমার ব্যাটারি ও চার্জার। এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশকে নিয়ে যেতে চান বিশ্ববাজারে।
হালিমা গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল কালাম হাসান টগর এখন টিভিকে বলেন, আমি শূন্য থেকে এই ব্যবসা শুরু করেছিলাম। ঐ সময়ের জ্ঞান, মেধা এবং পরিশ্রম আমাদের প্রথম সারিতে এনেছে। এন্ড্রোয়েড হেন্ডসেট ছাড়াও আমরা ভালো মানের প্রযুক্তি তৈরি করবো।
কারখানায় মোবাইল ছাড়াও তৈরি হচ্ছে চার্জার, ব্যাটারি, পাওয়ার ব্যাংক, ক্যাবল, ফ্যান, গ্যাং সুইচ, সার্কিট ব্রেকার, এলইডি ও এনার্জিসহ বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রিনক সামগ্রী ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স। সদর উপজেলার চাঁনপুর, পিয়ারাতলী ও ছত্রখিল এলাকায় ৩টি কারখানায় চলছে উৎপাদন কাজ। এরইমধ্যে চাঁনপুর হালিমা টেলিকমের কারখানাকে হাইটেক পার্ক ঘোষণা করেছে সরকার।
মান ঠিক রেখে পন্য উৎপাদনে জোর দেয়া হয় এখানে। প্রশিক্ষিত কর্মীরা তাদের দক্ষতা দিয়ে দেশীয় পন্য তৈরীর কাজে অংশ নিয়েছেন বলে জানান ইন্জিনিয়ার মিজানুর রহমান।
প্রযুক্তিপন্যের কাঁচামাল আমদানিতে ভ্যাট ট্যাক্স নির্ধারণে আরও সহজ নীতি অনুসরন করতে সরকারের প্রতি আহ্বানও জানান হালিমা গ্রুপ চেয়ারম্যান আবুল কালাম হাসান টগর।