দেশে এখন
অর্থনীতি
0

মূল্যস্ফীতিতে কিনছে না কেউ শখের গাড়ি

নীলফামারীতে মূল্যস্ফীতি আর ডলার সংকটে অর্ধেকে নেমে এসেছে বাইক বিক্রির পরিমাণ।

সকাল ১১টা পর্যন্ত দেখা যায় সৈয়দপুরের একটি মোটরসাইকেলের শো-রুম ক্রেতাশূন্য অবস্থায়। অলস সময় কাটছে বিক্রয়কর্মীদের। দুপুর ২টা নাগাদ চোখে পড়ে শহরের অন্য শো-রুম গুলোর একই চিত্র।

এভাবেই অলস সময় কাটছে মোটরসাইকেল বিক্রেতাদের। তারা বলছেন, মূল্যস্ফীতির প্রভাবে বেড়েছে দাম। যার ধাক্কায় গত পাঁচ মাস ধরে বিক্রি কমেছে অর্ধেক, এমনকি কিছু শো-রুমে আরো বেশি। তার ওপর যুক্ত হয়েছে দেশের অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি।

বিক্রয়কর্মীরা বলেন, এই মূহুর্তে ব্যবসার অবস্থা খুবই করুণ। আমাদের আগে বিক্রি ছিলো ৭০ শতাংশ আর এখন পঞ্চাশ।

চলতি বছরের জুন পর্যন্ত প্রায় প্রতিটি ব্র্যান্ডের বাইকের বিক্রি ছিল মাসে ৬০ থেকে ৭০টি। অথচ জুলাই থেকে ক্রমাগত নেমে গেছে মোটরসাইকেল বিক্রির সূচক। উদাহরণ হিসেবে সৈয়দপুরের তিনটি মোটরসাইকেল শো-রুমের তুলনামূলক চিত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, জুলাইয়ে বাজাজের ৪২টি মোটরসাইকেল বিক্রির বিপরীতে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে মাত্র ১১টি। হোন্ডার ৩৩টির বিপরীতে ১৬টি এবং ইয়ামাহার ৩৩টির বিপরীতে বিক্রি হয়েছে মাত্র ৮টি। একই অবস্থা অন্যান্য প্রতিটি বাইকের দোকানেই।

নিম্নগামী বিক্রির মতো একই হাল সার্ভিসিংয়ের। নেহায়েতই বাধ্য না হলে কেউ সার্ভিসিংয়ে আসছে না।

বাইক মেরামতকারীরা জানান, মানুষ এখন আর আগের মতো আসছে না। যন্ত্রাংশের দাম বেড়ে যাওয়াই এর একটা বড় কারণ।

বিক্রি কমে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে মোটরসাইকেল শো-রুমের মালিক ও কর্মচারীর বেতনভাতায়। জেলার অর্ধশতাধিক শো-রুমের অবস্থা একই রকম। কাঙ্ক্ষিত বিক্রি না হওয়ায় নিয়মিত ব্যয় মেটাতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। তার ওপর ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের তাগিদ।

মাসুম মটরসের সত্ত্বাধিকারী মাসুম আহমেদ বলেন, 'বাইক মানুষের একটা সৌখিনতার জায়গা। এ কারণে একটু চিন্তাভাবনা করে এগুচ্ছে।  যে কারণে প্রভাব পড়ছে।'

ব্যবসায়ী তারিকুল আলম তারিক জানান, 'মূলত ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় অনেকেই বাইকের দিকে ধাবিত হচ্ছে না। যাদের বাড়তি উপার্জন আছে কেবল তারাই আসছে।'

শুধু মোটরসাইকেল ব্যবসা নয়, অধিকাংশ খাতের বাণিজ্য ধীরগতির হয়ে গেছে বলে মনে করেন নীলফামারী চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি প্রকৌশলী এস এম সফিকুল আলম।

তিনি বলেন, 'শুধু বাংলাদেশে নয় গোটা বিশ্বেই এই উর্ধ্বগতি। আমি মনে করি নির্বাচন শেষ হলেই নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। তখন মানুষের নতুন করে উদ্যম সৃষ্টি হবে।'