যুদ্ধ , মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

ইসরাইলি বর্বরতার শিকার নিরীহ প্রাণিরা

শাহনুর শাকিব

আয়ের একমাত্র উৎস হারিয়ে ভয়াবহ সংকটের মুখোমুখি গাজার বহু মানুষ। দিন দিন বিপর্যয়ের মাত্রা অসহনীয় হয়ে ওঠায় যুদ্ধবিরতির স্থায়ী সমাধান চান গাজাবাসী।

দেড় মাসে ৪০ হাজার টন বোমা নিক্ষেপ করে গাজা উপত্যকাকে তছনছ করে দিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। লন্ডভন্ড নগরীতে যে দিকেই চোখ যায় সেদিকেই কেবল ধ্বংসস্তূপের চিহ্ন।

ঘর-বাড়ি মাটির সঙ্গে মিশে যাওয়ায় উপত্যকার প্রায় ২৪ লাখ বাসিন্দার মধ্যে ১৮ লাখই হয়েছেন বাস্তুচ্যুত। ধনি-গরিব সবাই ছুটছেন আশ্রয়কেন্দ্রে।

ইসরাইলি আগ্রাসনের হাত থেকে রেহাই পায়নি গৃহপালিত পশু-পাখিও। ধ্বংসের নগরীতে হতাহত ও বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা জানা গেলেও অজানাই রয়ে গেছে অবলা প্রাণির ক্ষয়ক্ষতির হিসেব। যা জীবিকার একমাত্র উৎস ছিলো অনেকেরই।

এমনই একজন খান ইউনিসের বাসিন্দা আহমেদ আল-নাজার। আশ্রয় কেন্দ্রে ৪৫দিন থাকার পর নিজের বসত-ভিটার খোঁজ নিতে এসে দেখেন তার খামারে থাকা ৪০ জোড়া কবুতরের মধ্যে বেঁচে আছে মাত্র ২ জোড়া কবুতর। ঘর-বাড়ি হারানোর পাশাপাশি তার আয়ের পথটিও বন্ধ হওয়ায় বাকরুদ্ধ তিনি।

আল-নাজার জানান, যুদ্ধ শুরুর পর আমরা বাড়িঘর ফেলে চলে গিয়েছিলাম। যুদ্ধবিরতির মধ্যে ফিরে এসে দেখি আমার কিছুই অবশিষ্ট নেই। বাড়িটি ধ্বংস হয়ে গেছে। নিজের বাচ্চার মতো করে লালনপালন করা কবুতরগুলোও রেহাই পায়নি। যা আমার জীবিকার একমাত্র উৎস ছিল। এখন আবার নতুন করে সব শুরু করতে হবে, যা খুবই কষ্টের।

এদিকে হামাস ইসরাইলের যুদ্ধবিরতিতেও গাজায় কমেনি খাদ্য ও জ্বালানির সংকট, বিপর্যস্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা, নেই পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্রও। বরং বাড়ছে বিপর্যয়ের মাত্রা। ভেঙে পড়া স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যদি সংস্কার করা না হয়। তাহলে বোমার আঘাতের তুলনায় রোগ-শোকেই সবচেয়ে বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারাবেন বলে ইতোমধ্যে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাই সাময়িক নয়, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চায় গাজাবাসী।

বাসিন্দারা বলেন, আমরা স্থায়ী যুদ্ধবিরতি দেখতে চাই। কারণ সবাই অনেক চাপের মধ্যে বসবাস করছি। প্রতিদিন দুশ্চিন্তায় থাকি, কখন ইসরাইলের ছোড়া বোমা এসে আমাদেরকেও শেষ করে দেবে। আমরা আশা করি এই সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এগিয়ে আসবে।

জাতিসংঘের আওতাধীন একাধিক সংস্থার তথ্য বলছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজার প্রায় ৪ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। কাজ না থাকায় অধিকাংশই এখন বেকার। উপত্যকার সাধারণ মানুষ নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর।

এসএস