ইসরাইলি আগ্রাসনে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার নিরীহ বাসিন্দাদের এই আহাজারি কিছুতেই থামছে না। ৪৩৫দিন ধরে চলমান আক্রমণের বর্বরতার মাত্রা আরও বাড়িয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। বিভিন্ন স্কুল ভবন ও আশ্রয় শিবিরে ঠাঁই নেয়া বাস্তুচ্যুত অসহায় ফিলিস্তিনিদের টার্গেট করে চালানো হচ্ছে হত্যাযজ্ঞ।
শনিবার একদিনেই হামলায় প্রাণ গেছে বহু মানুষের। এতে এ পর্যন্ত গাজায় প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৫ হাজারে।
ইসরাইলি বাহিনীর গণহত্যা থেকে মুক্তি চায় সর্বস্ব হারানো অসহায় ফিলিস্তিনিরা। স্বামী-সন্তান-প্রিয়জন হারিয়ে অনেই এখন নিঃস্ব। তার ওপর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটে ধুঁকছেন ২০ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত বাসিন্দা।
এক অধিবাসী বলেন, ‘তারা আর কত মানুষ মারবে। আমার মনে হয় কোনো জাতি এতো মৃত্যু দেখেনি। প্রতিদিন ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চলছে। এমন অস্বাভাবিক হত্যাযজ্ঞ আর কতোদিন চলবে।’
অন্য একজন বলেন, ‘আমাদের প্রতি দয়া করুন, গণহত্যা বন্ধ করুন। আমার অনেক স্বজনকে হত্যা করা হয়েছে।’
গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি বাসিন্দা নিখোঁজ রয়েছেন বলে আশঙ্কা করছে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরাইল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
এ অবস্থায় হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে এখনও শঙ্কায় ইসরাইলিরা। অথচ নেতানিয়াহু প্রশাসন যুদ্ধ বন্ধে স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় ক্রমশ ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ ইসরাইলিদের মধ্যে।
যার কারণে জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে তেল আবিবে প্রতি শনিবার জড়ো হন হাজার হাজার ইসরাইলি। প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর আগ্রাসী মনোভাবের কারণে তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে সরকারবিরোধী অবস্থান।
ইসরাইলের এক নাগরিক বলেন, ‘যুদ্ধ বন্ধের ইচ্ছা না থাকায় আমাদের জিম্মিরা মৃত্যু ঝুঁকির দিকে চলে যাচ্ছে। যেকোনো মূল্যে তাদের বাঁচাতে হবে। এমনকি চিরদিনের জন্য যুদ্ধ শেষ করে হলেও।’
আরেক অধিবাসী বলেন, ‘আমাদের জিম্মিদের মুক্ত করে নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চুক্তিটি সম্পন্ন করতে হবে।’
গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময় চুক্তিতে পৌঁছানোর বিষয়ে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিশর আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি'র কার্যালয়।