এ সম্মেলনকে ঘিরে মিথেন গ্যাস নিয়ে চলছে আন্তর্জাতিক নানা মহলে আলোচনা। ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিলের নিকোলা আরমারোলি বলেন, মিথেন গ্যাস খালি চোখে ধরা পড়ে না। এই গ্যাস সূর্যের আলোর ক্ষতিকর কিছু অংশ শোষণ করে। পরিবেশে মিথেনের উপস্থিতি স্যাটেলাইট চিত্রে ধরাও পড়েছে।
জাতিসংঘ বলেছে, বিশ্বব্যাপী ২০ শতাংশ উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী মিথেন গ্যাস। শিল্পবিপ্লবের পর অনেক কারখানা স্থাপন এবং ব্যাপকভাবে জ্বালানিনির্ভর কৃষিকাজ শুরুর পর মিথেনের ঘনত্ব দেড়শ' শতাংশ বেড়ে যায়। যা বর্তমানে প্রতিবছর ১ শতাংশ করে বাড়ছে বলেও জানিয়েছে ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি।
আন্তর্জাতিক এনার্জি এজেন্সির মতে, মিথেন নির্গমন মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হচ্ছে বিশ্ব। বৈশ্বিক তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে হলে মিথেনের নির্গমন কমানো জরুরি।
ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির নির্বাহী পরিচালক ফাতিহ বিরল'র মতে, মিথেন নির্গমন রোধে উন্নতি নেই। মিথেনকে গুরুত্বের সঙ্গে মোকাবিলা না করলে বৈশ্বিক উষ্ণতা সীমিত করা অসম্ভব হবে। কিন্তু পরিবেশে মিথেনের নির্গমন ঠেকানোর পদক্ষেপগুলো যথেষ্ট নয়।
একবছর শুধু এনার্জি সেক্টর মিথেন ছেড়েছে প্রায় ১৩৫ মিলিয়ন টন। গবাদিপশু, কৃষিকাজ, বর্জ্য অব্যবস্থাপনা, রান্না ও জীবাশ্ম জ্বালানির মাধ্যমে পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ছে ক্ষতিকারক মিথেন গ্যাস।
মূলত জৈব-অজৈব বর্জ্য পঁচে এই গ্যাস তৈরি হয়। জীবাশ্ম জ্বালানির ধোঁয়া ও রান্নার জ্বালানি থেকেও প্রতিনিয়ত উৎপন্ন হচ্ছে অদৃশ্য এই ক্ষতিকর গ্যাস।
মিথেন গ্যাস বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। মিথেনের আধিক্যের সবচেয়ে ক্ষতিকর দিক হচ্ছে- পৃথিবীর উপরিতলের উষ্ণতা বৃদ্ধি। যা কার্বন ডাই অক্সাইড চেয়েও বেশি ক্ষতিকর। বিশ্বের প্রায় ৬০ ভাগ মিথেন নির্গমন হয় মানবসৃষ্ট কারণে।
পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য গ্রিনহাউজ গ্যাসের অন্যতম উপাদান বর্ণ-গন্ধহীন এই মিথেন গ্যাস। বিজ্ঞানীদের মতে, বায়ুমণ্ডলে খুব অল্প সময়ের জন্য স্থায়ী হয় এই গ্যাস। পৃথিবীতে তাপ আটকে রাখতে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের চেয়ে মিথেন ২৮ গুণ বেশি কার্যকর।