বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউয়ের তরঙ্গমালায় জেগে ওঠা উপজেলা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ। বারবার সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস আর ভাঙনের শিকার সংগ্রামী মানুষরাই এখানকার অধিবাসী ।
তাল-তমাল, নারিকেল ও সুপারি কুঞ্জের শস্য-শ্যামল এই উপজেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে চরানো হয় গরু, মহিষ আর ভেড়া। ৩৯৪ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের উপজেলায় অন্তত আড়াই লাখ মানুষের বসবাস। একসময় কৃষি ও মৎস্য শিকারের ওপর নির্ভশীল থাকলেও গ্যাসকূপ ঘিরে এ অঞ্চলে তৈরি হয়েছে কাজের সুযোগ।
২০১১ সালে জেলার কবিরহাটে গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার পর, কোম্পানীগঞ্জের সিরাজপুরে শাহাজাদপুর-সুন্দলপুর গ্যাসক্ষেত্রের কূপ খনন করা হয়। ২০১২ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০১৬ সালের ১৪ জুন পর্যন্ত দৈনিক সাত মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করে বাপেক্স।
২০১৭ সালের ২০ এপ্রিল শুরু হয় ২ নম্বর কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন। যেখান থেকে দৈনিক ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়।
সবশেষ গেল ৪ নভেম্বর সুন্দলপুর-৩ নম্বর কূপে তিন হাজার ফুট গভীরতার উদ্দেশ্যে খনন শুরু হয়। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৪ সালের শুরুর দিকে এর কাজ শেষ হবে। যেখান থেকে দৈনিক ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার আশা করা হচ্ছে।
গ্যাসক্ষেত্র ঘিরে আনন্দের কমতি নেই স্থানীয়দের মধ্যে। কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বাড়িতে গ্যাস সংযোগ পাওয়ার আশা তাদের।
সম্ভাবনাময় এই উপজেলায় চলছে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কাজও। কোম্পানীগঞ্জের চরাঞ্চলকে কাজে লাগনো গেলে পাল্টে যাবে এই উপকূলের চিত্র।
এখান থেকে উত্তোলিত গ্যাস সরবরাহের মাধ্যমে পরিকল্পিত শিল্পকারখানা স্থাপন করা হলে উপকূলের এই অঞ্চল পাবে নগরায়নের ছোঁয়া। তৈরি হবে নতুন কর্মসংস্থান।