কেউ বলেন তাকে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব, কারও কাছে তিনি সঙ্গীতবিদ, কারও কাছে বা একান্তই মিনু আপা। সেই মিনু আপার শেষ বিদায়ে একনজর দেখার জন্য ছুটে এসেছেন তার অগণিত ভক্ত, শিষ্য ও শুভানুধ্যায়ীরা। গানে গানে সকলের প্রার্থনা কালরাত্রিতে অসীমের পানে যাত্রা করা ছায়ানটের ধ্রুবতারা সনজীদা খাতুনের এই যাত্রা যেন হয় পরম স্নিগ্ধ প্রশান্তির।
রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গতকাল (মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ) পাড়ি জমিয়েছেন পরপারে। বুধবার ছায়ানটে তার দীর্ঘ জীবনের সহযোদ্ধারা ফুলেল শ্রদ্ধায় অশ্রুসজল চোখে এসেছিলেন শেষ বিদায় দিতে।
সনজীদা খাতুনকে শ্রদ্ধা জানাতে আসা একজন বলেন, 'সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সবচেয়ে উজ্জ্বল বাতিঘর নিভে গেল। তিনি তার অন্তরের আলো দিয়ে অজস্র প্রাণে আলো জ্বেলেছিলেন, সেটা তো ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। তিনি প্রগতিশীল চর্চা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। এবং তিনি সবসময় আদর্শের প্রতি অনুগত ছিলেন। বিন্দুমাত্র তিনি তার সাথে আপোষ করেননি।'
এরপর তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা বিভাগে। পরে শহীদ মিনারে সর্বসাধারণের ভালোবাসায় সিক্ত হন এই ভাষা সৈনিক।
কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার। ২০২১ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী সম্মাননায় ভূষিত করে। বিদায়ের পরও তিনি চেয়েছেন মানুষের মধ্যে অমর হয়ে বাঁচতে। তাইতো স্বেচ্ছায় করে গেছেন মরণোত্তর দেহদান।
আর ১০দিন বাদে বর্ষীয়ান এই নারীর ৯৩ বছরের চৌকাঠ পেরোতো। কিন্তু আক্ষরিক অর্থে চলে গেলেও ছায়ানটের ছায়ার মাঝেই সনজীদা খাতুনরা থাকবেন এই ভুবনে।