কৃষি , নগর কৃষি
দেশে এখন

নাটোরে বাড়ির ছাদে বেদানা চাষ

নাটোরে বাড়ির ছাদে আমদানিনির্ভর ফল বেদানা চাষ করে তাক লাগিয়েছেন এক আইনজীবী। শুরুটা শখের বসে হলেও ভালো ফল পাওয়ায় আশপাশের ছাদেও বাণিজ্যিকভাবে আবাদ করতে চান তিনি।

নাটোর পৌর শহরের বড়গাছায় থাকেন আইনজীবী আব্দুল্লাহিল বাকি তরিত। মাত্র ৪শ' স্কয়ার ফিট আয়তনের ছাদে বছরে প্রায় ৩০০ কেজি উন্নতজাতের বেদানা উৎপাদন করে তিনি সাড়া ফেলেছেন।

করোনার সময় শখের বসে বাড়ির ছাদে সবজির পাশাপাশি ফলের চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তার ৫২টি গাছে বছরে ৫ থেকে ৬ কেজি বেদানা ধরছে। যা স্বাদে ও মানে আমদানি করা বেদানার চেয়ে কোন অংশে কম নয়।

কৃষি উদ্যোক্তা আব্দুল্লাহহিল বাকি তরিত বলেন, ‘আশপাশের বাড়ির ছাদগুলোতেও আমি এই ফল বাণিজ্যিকভাবে চাষ করবো।’

তার স্ত্রী তাসনিন সুলতানা বলেন, ‘পরিবারের পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি আমরা আত্মীয়-স্বজনদের দিতে পারছি। এতে করে তারাও খুশি হন।’

নাটোরে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে বেদানা। ছবি: এখন টিভি

কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্ষাকাল নেই এমন দেশে বেদানার আবাদ বেশি হয়। বাংলাদেশে বর্ষাকাল থাকায় মাটিতে রোপণ করে তেমন ভাল ফল পাওয়া যায় না। তবে বাড়ির ছাদে জিও ব্যাগ বা বড় টবে চাষ করা হলে বেদানার রয়েছে ব্যাপক সম্ভাবনা।

নাটোর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক ড. জাহাঙ্গীর ফিরোজ বলেন, নাটোরে বাসাবাড়ির ছাদগুলো কৃষিকাজের আওতায় আনার জন্য আমরা নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি। আর বাড়ির ছাদে এসব ফল চাষ করে বাড়তি আয় করাও সম্ভব।’

নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (হর্টিকালচার উইং) পরিচালক কে জে এম আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘এই ফল বাংলাদেশে সরাসরি মাটিতে চাষ করা যায় না। তবে বাড়ির ছাদে বড় টবে কিংবা ব্যাগে চাষ করা যায়।’

দেশে বেদানার চাহিদার পুরোটাই আমদানিনির্ভর। ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও থাইল্যান্ডসহ অন্তত ৭টি দেশ থেকে আসা বেদানার দামও থাকে সাধারণের নাগালের বাইরে।

হর্টিকালচার বিভাগের তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ মৌসুমে দেশে ৩৮ হাজার ৩২৮ টন বেদানা আমদানি হয়েছে। যার আনুমানিক বাজার দর অন্তত ৮ হাজার কোটি টাকা।

নাটোরে অন্তত ৫ হাজার উঁচু ভবন রয়েছে। এসব ভবনে সবজির পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে বেদানা চাষ করলে স্থানীয় পুষ্টি চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করা সম্ভব বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর