সদর উপজেলার মান্দারি গ্রামের কৃষক মো. শাহজাহান। শীতকালীন সবজি চাষাবাদের জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন মাঠে। নরম মাটিতে কোদাল চালিয়ে চাষাবাদের জন্য প্রস্তুত করছেন জমি। এরপর এখানে চাষাবাদ করা হবে লালশাক, মুলা, ধনেপাতাসহ শীতকালীন বিভিন্ন সবজি। এর আগে একবার প্রস্তুত করা জমিতে পানি উঠে নষ্ট হয়েছে ফলন। তবুও হাল না ছেড়ে ফের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় তিনি।
শাহজাহানের জমি থেকে পানি নেমে গেলেও জেলার চার উপজেলায় অসংখ্য কৃষকের জমি এখনও তলিয়ে আছে পানিতে। এই সময় ফুলকপি, বাঁধাকপি, আলু, মূলাসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজিতে মাঠ সয়লাব থাকলেও এবারে তা নেই।
সদর, ফরিদগঞ্জ, হাজিগঞ্জ, সাহরাস্তি উপজেলার প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে পানি জমে থাকায় ব্যাহত হয়েছে শীতকালীন আগাম সবজি চাষ।
কৃষকরা বলছেন, চলতি বছর বর্ষায় অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় প্রতিটি বিলে। পানি নিষ্কাশনের খালগুলোতে বাঁধ দেওয়াসহ সংস্কারের অভাবে দেখা দেয় দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা। এতে আগাম সবজি চাষের সুযোগ হারাচ্ছেন ১৫ হাজার কৃষক।
উত্তরবঙ্গের কৃষকদের উৎপাদিত শীতকালীন সবজি বাজার দখল করে নিলেও এখনো চাষাবাদের সুযোগ পাচ্ছে না চাঁদপুরের কৃষকরা। সময়মতো চাষাবাদ শুরু না করতে পারায় ক্ষতির মুখে পড়ছেন তারা।
কৃষি বিভাগ বলছে, জলাবদ্ধতায় ৪ উপজেলার ক্ষতির পরিমাণ ৩ কোটি টাকা। তাই পরিকল্পিতভাবে খাল ও নালা সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করার আশ্বাস কর্মকর্তাদের।
কৃষি অধিদপ্তর চাঁদপুরের উপ-পরিচালক সাফায়েত আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ‘অক্টোবরে সবজি আমাদের মাঠে থাকার কথা থাকলেও নভেম্বরেও কৃষকরা প্রত্যাশিত সবজি আবাদ করতে পারবে না। ফলে প্রাথমিক পর্যায়ে সবজির প্রত্যাশিত দাম পাবে না। চাঁদপুরের নিষ্কাশন নালাগুলো পরিষ্কার করে যদি জলাবদ্ধতা কমাতে যায় তাহলে আরও জমির আবাদি হবে।’
গত বছর চাঁদপুর জেলায় সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ হয় শীতকালীন সবজি। যেখানে বাণিজ্য হয় ১৬০ কোটি টাকার।