গ্রামীণ কৃষি
কৃষি
0

বস্তায় আদা চাষে বাণিজ্যিকভাবে লাভবান কৃষক

শেরপুরে বাণিজ্যিকভাবে বস্তায় আদা চাষ শুরু হয়েছে। বাড়তি খরচ, কীটনাশক ও সেচের প্রয়োজন না হওয়ায় বস্তায় আদা চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। চলতি মৌসুমে জেলায় ৬ লাখ ৩৩ হাজার বস্তায় আদা চাষ হয়েছে। যেখান থেকে আয় হবে ৬২ কোটি টাকার বেশি। লাভজনক হওয়ায় ভবিষ্যতে এ পদ্ধতিতে আদা চাষের পরিমাণ আরও বাড়ার আশা কৃষি বিভাগের।

তারিফ হাসান পেশায় একজন ব্যবসায়ী। শেরপুর সদর উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় বাড়ির পাশে পতিত জমিতে শুরু করেন বস্তায় আদা চাষ। এক বিঘা জমিতে চার হাজার বস্তায় করেছেন আদার চাষ। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। তারিফ আশা করছেন সব মিলিয়ে তিনি চার হাজার বস্তা আদা থেকে তিন লাখ টাকার বেশি আয় করতে পারবেন।

তারিফ হাসান বলেন, 'আদার ফলন সঠিকভাবে আসলে আশা করি তিন লাখ টাকার ওপর আদা বিক্রি করা টাকা আসবে।'

ছায়াযুক্ত স্থান, পুকুরপাড়, পতিত জমি বস্তায় আদা চাষের উপযুক্ত স্থান। এভাবে আদার চাষে অন্য সবজির মতো বাড়তি যত্ন, কীটনাশক বা সেচের প্রয়োজন হয় না। ফলে অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় শেরপুরের কৃষকের মাঝে বেশ সাড়া ফেলেছে বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষ।

স্থানীয় একজন কৃষক বলেন, 'অনেক পতিত জমি আছে, কিন্তু আমরা এগুলো অবহেলা করে ফেলে রেখেছি। ইনশাআল্লাহ আগামীতে আমরা এ ফসল ধরে রাখার চেষ্টা করবো।'

স্থানীয় কৃষকরা জানান, উপজেলা কৃষি বিভাগের সহায়তা ও তত্ত্বাবধানে এখন অনেকেই আদার চাষ করছেন। শুরুতে নিজেদের চাহিদা মেটানোর জন্য চাষ করলেও এখন তা বাণিজ্যিকভাবে সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। পরিশ্রম ও খরচ কম হওয়ায় পড়ালেখার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও সহজেই এ কাজে যুক্ত হচ্ছেন।

চলতি মৌসুমে শেরপুর জেলায় ছয় লাখ ৯৩ হাজার বস্তায় আদা চাষ করা হয়েছে। যার মধ্যে সদর উপজেলায় লাখ লাখ ৩৩ হাজার বস্তায় আদা রোপণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এ পদ্ধতিতে খরচ হয়েছে প্রায় ১০ লাখ টাকা। যেখান থেকে ৬২ কোটি আয়ের আশা। এ পদ্ধতিতে চাষের পরিমাণ আরও বাড়াতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস কৃষি বিভাগের।

শেরপুর সদরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম খোকন বলেন, 'আদা একটি লাভজনক ফসল। শেরপুর উপজেলায় এটি বাণিজ্যিকভাবে করা হয়েছে। যদি কোনো কৃষক আগ্রহী হয় তাহলে আমরা জেলা অফিস এবং উপজেলা অফিসের পক্ষ থেকে তাকে সহযোগিতা এবং পরামর্শ প্রদান করবো।'

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য বলছে, মার্চ এবং এপ্রিল আদা রোপণের উপযুক্ত সময়। নভেম্বর-ডিসেম্বরে এ আদা বিক্রির উপযোগী হয়। একেকটি বস্তায় তিন থেকে চারটি আদার গাছ থেকে দেড় থেকে দুই কেজি আদা সংগৃহীত হয়। পাশাপাশি আদা তোলার পর এসব বস্তায় অন্য সবজি চাষ করে বাড়তি আয় করা সম্ভব।

tech

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর