ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগকৃত কর্মচারীদের বেতন বন্ধ রয়েছে ছয় মাসেরও বেশি সময়। বকেয়া পরিশোধের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। কয়েক দিনের কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালে বিঘ্নিত হচ্ছে রোগীর সেবা। হাসপাতাল পরিচ্ছন্নতায় দেখা দিয়েছে এক ধরনের স্থবিরতা। দ্রুত সমস্যা সমাধান না হলে ভোগান্তি আরো বাড়বে বলে মনে করেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
প্রায় দুই যুগ ধরে পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে ২৫০ শয্যার ফেনী জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত আছেন ঝর্ণা রক্ষিত। আগস্টের গেলো বন্যায় নষ্ট হয়েছে ঘর-বসতির সব আসবাব। উপায় না পেয়ে উঠেছেন বোনের বাসায়। গত ছয় মাস বেতনও বন্ধ। দিশেহারা হয়ে উঠেছেন গতর খাটা চতুর্থ শ্রেণীর এই কর্মচারী। দুঃখের কথা বলতে গিয়ে কেঁদেও দিচ্ছিলেন।
হাসিনা আক্তারের গল্পটাও প্রায় এক। এই চাকরি দিয়ে চলতো ৬ জনের সংসার। এখন না দিতে পারছেন ঘর ভাড়া, না জোগাড় করতে পারছেন আহার। প্রতিটি দিন কষ্টে কাটছে তাদের।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ৫৩ জন কর্মচারী আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এসব কর্মচারীর মাঝে ডোম ও ডোম সহকারী, ওয়ার্ড বয়, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, বাবুর্চি সহকারী, আয়া, মালি, দারোয়ান রয়েছেন।
প্রতি মাসে ঠিকাদারের মাধ্যমে তারা ১৫ হাজার টাকা হারে বেতন পাওয়ার কথা। তবে অভিযোগ রয়েছে হাসপাতালের কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে ৮ হাজার টাকা বেতন দেয়া হয় তাদের। সে টাকাও ছয় মাস ধরে দেয়া হচ্ছে না।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, 'হাসপাতালে বর্তমানে আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত ৫৩ জন কর্মচারীর বেতন-ভাতা ছয় মাস বন্ধ রয়েছে। এ নিয়ে তাদের মাঝে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। জটিলতা নিরসনে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।'
ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাম্মদ আসিফ ইকবাল বলেন, ‘আউটসোর্সিং কর্মচারীরা জুলাই থেকে বেতন পাচ্ছেন না। এ বিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করে অভিহিত করেছি। তাদের পক্ষের থেকে আমাদের সহকারী পরিচালক মন্ত্রণালয় গিয়ে কথা বলে এসেছেন। আশা করি দ্রুত এর সমাধান হবে।’
২৫০ শয্যার ফেনী জেনারেল হাসপাতাল। হাসপাতালের রোগী, তাদের স্বজন ও স্থানীয়রা বলছেন সেবার মান বাড়াতে হলে কর্মচারীদের বেতন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার সমাধান প্রয়োজন।