খাল ভরাট হওয়ায় নেই পানিপ্রবাহ। বোরো সেচের জন্য করা হয়েছিল বিকল্প পদ্ধতি। কিন্তু বিকল্প পদ্ধতিতে পানি সেচের ব্যবস্থাও কাজে আসছে না। সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে সেচের পাম্প ও যন্ত্রপাতি।
অসম্পূর্ণ খনন, দখল আর দূষণে মরতে বসেছে আঙ্গারিয়া-বুড়িরহাট খাল। কোথাও শুকনো, কোথাও ময়লা আবর্জনার স্তূপ আবার কোথাও খাল দখল করে গড়ে ওঠা বড় বড় ইমারত। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে পানিপ্রবাহ। পৌর এলাকার ময়লা আবর্জনায় ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।
বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘মানুষ পানি পায় না। খাল ভরাট হয়ে গেছে।’
আরেকজন বলেন, ‘ময়লা আবর্জনার কারণে এখানে মশা ও মাছির পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে।’
আব্দুল জব্বার, সোনামুখী গ্রামের বোরো চাষি। জমি প্রস্তুত করেছেন বোরো আবাদের জন্য। কিন্তু সেচের পানি না থাকায় ফসলি জমি ফেটে চৌচির। এই জমির উপরেই চলে তার সংসার। চাষাবাদ করতে না পারায় সংসার চালানো নিয়েই দুশ্চিন্তায় এই কৃষক।
কৃষক আব্দুল জব্বার বলেন, ‘পানির অভাবে চাষ করা যাবে না। জমি ফেটে গিয়েছে।’
আব্দুল জব্বারের মত দুইটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার শত শত চাষির একই অবস্থা। তাদের দুই হাজার একর ফসলি জমির বোরো আবাদ হুমকির মুখে। পানির অভাবে চাষাবাদ বন্ধ থাকায় দুশ্চিন্তায় এসব কৃষক।
কৃষকদের একজন বলেন, ‘ধান চাষ করে বেঁচে আছি। এখন এই ধানই চাষ না করতে পারি তাহলে তো বাঁচতে পারবো না।’
কৃষি বিভাগ বলছে, কৃষির জন্য সেচ অপরিসীম আর সেচ ছাড়া বোরো আবাদ অসম্ভব। ওই সব জমির সেচের ব্যবস্থাসহ খাল খননের উদ্যোগের আশ্বাস দিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক।
শরীয়তপুরের সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বলেন, ‘বোরো আবাদে যারা পানি সরবরাহ করে তারা যেন কৃষকের কথা চিন্তা করে সেচ প্রবাহ রাখে। দীর্ঘ মেয়াদিতে কি করা যায় তা নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে আমরা আলোচনা করবো।’
কাল বাঁচাতে এগিয়ে আসতে হবে স্থানীয়দের আর খনন করে খাটের স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরে আনার উদ্যোগের কথা জানালেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই কর্মকর্তা।
শরীয়তপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক হাসান বলেন, ‘পদ্মা নদীর পলির কারণে এখানে ভরাট হয়ে যায়। পাশাপাশি এখানে জোয়ার ভাটার একটা প্রবাহ থাকে।’
সুরেশ্বর খাল খনন প্রকল্পের আওতায় এক কোটি ৯০ লাখ টাকা পেয়ে খালটি খনন করা হয়।