সকালের সূর্য দেখে নাকি বোঝা যায় দিনটা কেমন যাবে? কিন্তু টেস্ট ক্রিকেট এতোটাই আনপ্রেডিক্টেবল যে, সকাল দেখে পুরো দিনের হিসেব করা বেশ কঠিন। কারণ যেকোনো সেশনেই রং বদলাতে পারে ইনিংসের। বাংলাদেশেরও হয়েছে তাই।
রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের প্রথম ইনিংসে মাত্র ২৬ রানেই ৬ উইকেট হারায় সফররতরা। স্বাভাবিকভাবেই সে মুহূর্তে টাইগারদের প্রাথমিক লক্ষ্য দাঁড়ায় ফলোঅন এড়ানো। তখন নিজেদের ইতিহাসের সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়ার শঙ্কাও জাগে। স্বীকৃত ব্যাটার বলতে ক্রিজে ছিলেন লিটন দাস আর মেহেদী মিরাজ।
তারা দুজন মিলেই ভয়কে জয় করলেন। দুই ডানহাতি ব্যাটার শুধু ফলোঅনই এড়াননি। দৃষ্টিনন্দন শট খেলে বাংলাদেশের রানের চাকা সচল রেখেছেন। ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে গড়েছেন বিশ্ব রেকর্ড। টেস্টে ক্রিকেটের ১৪৭ বছরের ইতিহাসে ৫০ রানের আগে ছয় উইকেট পতনের পর সর্বোচ্চ ১৬৫ রানের জুটি গড়েন দুই ব্যাটার। তাদের আগের রেকর্ডটাও কাকতালীয়ভাবে পাকিস্তানেই হয়েছিল। সেটা হয়েছিল ২০০৬ সালে। করাচিতে তখন ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে ১১৫ রানের পার্টনারশিপ করেছিলেন আবদুল রাজ্জাক আর কামরান আকমল।
রেকর্ড গড়ার দিনে ক্যারিয়ারের অষ্টম ফিফটি হাঁকিয়েছেন মেহেদী মিরাজ। যদিও ফিফটির পর ইনিংস তেমন বড় করতে পারেননি। ৭৮ রাই খুররামকে উইকেট দেন এই অলরাউন্ডার। তার বিদায়ের পর খানিকটা ধীরগতিতে ব্যাট করতে থাকেন লিটন দাস। এর মধ্যে একবার চোটেও পড়েন তিনি।
তবে, শঙ্কা কাটিয়ে ব্যাট করে তুলে নেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতক। এর মাধ্যমে ব্যতিক্রমী এক রেকর্ড গড়েছেন লিটন দাস। সেটি হলো, ৫০ রানের আগে ৫ উইকেট হারানোর পর তিনবার সেঞ্চুরি করেছেন ডানহাতি ব্যাটার। বিশ্বের আর কোনো ক্রিকেটারের এমন কীর্তি নেই।
শতকের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না লিটন দাস। তার আউটের পর বাংলাদেশের ইনিংস থামা হয়ে দাঁড়ায় সময়ের ব্যাপার। হয়েছেও তাই। রানের খাতা না খুলেই বিদায় নেন নাহিদ রানা। স্বাগতিকদের চেয়ে ১২ রানে পিছিয়ে থেকে অলআউট হয় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটা তেমন ভালো করতে পারেনি পাকিস্তান। শেষ বিকেলে মাত্র ৯ রানেই ২ উইকেট হারায় শান মাসুদের দল। তৃতীয় দিনশেষে ২১ রানের লিড পাকিস্তানের। ম্যাচের ভাগ্য কার দিকে যাচ্ছে তা বলা কঠিন। তবে, সোমবার রাওয়ালপিন্ডির আকাশে চোখ রাঙাচ্ছে বৃষ্টি।