পূর্বাচলের বালু ব্রিজের কাছে ছিনতাই-ডাকাতি নিত্যদিনের ঘটনা। সন্ধ্যা নামলেই অজানা অনিশ্চয়তা ঘিরে ধরে মানুষদের।
এক অটোচালক বলেন, ‘কিছুদিন আগেও ভুয়া পুলিশ সেজে এক মহিলার ব্যাগ থেকে ৩০ হাজার টাকা, চেইন নিয়ে গেছে।’
আরেকজন জানান, বস্তায় হাত-পা বেঁধে ফেলে রেখে চলে যায়। মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়া হয়।
ছিনতাই, ডাকাতি ও চুরির কারণে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী দেখার নেই কেউ। ছিনতাই অথবা চুরির পরে অভিযোগ করলেও মেলে না সুরাহা। পূর্বাচলে ঘুরতে আসা মানুষদের সর্বস্ব হারানো ঘটনা এলাকাবাসী শুনলেও অপরাধী ধরা পরার ঘটনা খুবই কম। পূর্বাচলে রাতে ঘুরতে আসা মানুষরাও এখন সময় কাটায় অনিশ্চয়তায়।
ঘুরতে আসা একজন জানান, আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আসি। আমরা যে এখানে এসেছি কোনো নিরাপত্তা নেই। একই চিত্র হাতিরঝিলে। এখানে এক সময় রাতে ঘুরতে আসতে যাত্রিক নগরের যাতাকলে পরে হাপিয়ে ওঠা মানুষরা। কিন্তু সেই চিত্রের পরিবর্তন হয়েছে এখন।
এলাকার স্থানীয় এক অধিবাসী বলেন, ‘যখন আমার ফোন, মানিব্যাগ ছিনতাই করতে চাইবে তখন আমি তো সেগুলো বাঁচাতে চাইবো। এখন আমাকে তো কোনো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতেও পারে।’
একই চিত্র দিয়াবাড়ির। রাত নামলেই চুরি এখানকার নিত্যদিনের ঘটনা। এ বিষয়ে এলাকার স্থানীয় একজন জানান, ব্রিজের মাথাতেই ছিনতাই হয়। রানিং এর মধ্যে মোটরসাইকেলে এসে মোবাইল ছিনতাই হয়।
রাজধানীর ৫০টি থানার মামলা বিশ্লেষণ করে দেখা যায় জুলাই মাসে শুধু ঢাকায় খুন হয়েছে ৭৫ জন এবং আগস্ট মাসে খুন হয়েছে ৩২ জন। ছিনতাই ও জোর পূর্বক কেড়ে নেয়ার ঘটনায় জুলাই মাসে ৪টি ও আগস্ট মাসে শুধু ৩টি মামলা হয়েছে। অথচ বাস্তব চিত্র ভিন্ন। কি বলছে বিশ্লেষকরা।
সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, ‘আমরা কয়েকদিন আগে দেখলাম পুলিশ বলছে হাতিরঝিল এরিয়া এড়িয়ে যাওয়ার জন্য। তাহলে এই প্রশ্নে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাটা কোথায়? আমরা তো সেভাবে কোনো ব্যবস্থা দেখি না। তাহলে নাগরিককে অনিরাপদ রেখে বিনোদন বা অবসর সময় কাটানোর প্রসঙ্গকে সামনে এনে এসব স্থান ক্রমান্বয়ে অনিরাপদ হয়ে উঠছে। এটি আস্তে আস্তে বিনোদনের নামে অপরাধীদের অরণ্যে পরিণত হচ্ছে।’
পুলিশ বলছে বিনোদন কেন্দ্রের নিরাপত্তায় প্রস্তুত আছে পুলিশ। প্রয়োজনে ৯৯৯ এ ফোন দিলেই পুলিশ সহায়তার জন্য চলে আসবে।
ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ‘পূর্বাচলে, দিয়াবাড়িতে বা হাতিরঝিলে যেসব বেওয়ারিশ মরদেহ পাওয়া গেছে সেগুলো দেখা গেছে অন্য জায়গার ঘটনা। পরবর্তী সময়ে কে বা কারা মরদেহগুলো ফেলে গেছে। আমরা সবসময় এখানকার প্রদান করে আসছি। কেউ নিরাপত্তা ঝুঁকি অনুভব করলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে অবহিত করলে নিকটস্থ পেট্রোল দল দ্রুত সময়ে সাড়া দিবে।’
অপরাধীদের তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য নগরবাসীদের আহবান জানিয়েছে পুলিশ। এতে নিরাপদ হবে দর্শনীয় স্থানগুলো দাবি তাদের।





