শান্ত নগরী খুলনার পরিবেশ যেন দিন দিন অশান্ত হয়ে উঠছে। নিয়ন্ত্রণের বাইরে পানি, বায়ু বা শব্দ দূষণের মাত্রা।
খুলনার নিরালার মোড় এলাকা। যেখানে সড়কের অর্ধেকটা জুড়ে স্তূপ করে রাখা হয়েছে ময়লা। জনবহুল এই এলাকায় চলাচলে দুর্গন্ধ আর অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ওষ্ঠাগত জীবন। একই অবস্থা নিউমার্কেটের পেছনের সড়কের। রাস্তার পাশে আবর্জনা রাখায় দুর্গন্ধে অচল ব্যবসা-বাণিজ্য। এছাড়া নগরীর রূপসা ঘাট থেকে শীববাড়ি মোড় পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় চোখে পড়বে একই চিত্র।
বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘ডাস্টবিনের জন্য আমাদের এখানে চলাচলের অনেক সমস্যা হচ্ছে।’
খুলনার প্রধান সড়কগুলোর বাইরে অলিগলিতে ঢুকলেই দেখা যায় নগরবাসীর অসচেতনতার চিত্র। একেতো সরু ড্রেনগুলোর অচলাবস্থা তার ওপর আশপাশের মানুষের ফেলা আবর্জনায় ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। সিটি কর্পোরেশনের দেয়া তথ্য মতে, প্রতিদিন নগরীতে প্রায় ১ হাজার টন ময়লা-আবর্জনা হয়। তবে ৮শ টন ময়লা সিটি করপোরেশন থেকে অপসারণ করা হলেও বাকি ২শ টন পরে থাকে বিভিন্ন ড্রেন আর বাসাবাড়ির আশপাশে।
কেসিসি প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা প্রকৌশলী মো. আব্দুল আজিজ বলেন, ‘ময়লার ব্যাপারে কোনো ছাড় নয়।’
খুলনায় বায়ু দূষণের একটি অন্যতম কারণ ড্রেন থেকে ময়লা তুলে রাস্তার উপরে ফেলে রাখা আর সড়কে রাখা নির্মাণ সামগ্রী। যাতে মাত্রাতিরিক্ত ধুলাবালি মিশছে বাতাসে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, বাতাসের বিভিন্ন উপাদান পরীক্ষা করে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। যেখানে এই এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে ৫০ এর উপরে গেলেই তা জনজীবনে ঝুঁকিপূর্ণ সেখানে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় এর পরিমাণ ১৫০ এর ওপরে। একইসাথে নগরীতে শব্দ দূষণের পরিমাণও কম নয়।
খুলনা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক পারভেজ আহম্মেদ বলেন, ‘যেসমস্ত জায়গাতে বায়ু দূষণ সংক্রান্ত বিষয় থাকে সেসব জায়গায় আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।’
প্রায় ১৬ লাখ মানুষের বসবাস খুলনা নগরীতে। তাই সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বর্জ্য অপসারণ ও বায়ু দূষণ রোধ করতে প্রশাসনের সঠিক তদারকির প্রয়োজন বলছেন বিশেষজ্ঞরা।