আজ সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ঢাকায় পৌঁছাবেন জুবাইদা রহমান

হিথ্রো বিমানবন্দরে জুবাইদা রহমান
হিথ্রো বিমানবন্দরে জুবাইদা রহমান | ছবি: এখন টিভি
0

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নিয়ে যেতে যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান। বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইটে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন ডা. জুবাইদা রহমান। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত একটার পর লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে বিজি-৩০২ ফ্লাইটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করেছেন তিনি।

আজ (শুক্রবার, ৫ নভেম্বর) বিমানবন্দর থেকে সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে দেখতে যাবেন তিনি। 

সেখান থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে অসুস্থ শাশুড়িকে সঙ্গে নিয়ে লন্ডনে ফেরার কথা রয়েছে তার। সেখানে লন্ডন ব্রিজ হাসপাতালে ভর্তি করানোর কথা রয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসনকে। 

এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে যাচ্ছেন কারা?

বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার সঙ্গে ১৪ জন যেতে পারেন। যেখানে থাকবেন খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ সৈয়দা শামিলা রহমান, চিকিৎসক আবু জাফর মো. জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরী, চিকিৎসক ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকি, চিকিৎসক মো. শাহাবুদ্দিন তালুকদার, চিকিৎসক নূরউদ্দিন আহমদ, চিকিৎসক মো. জাফর ইকবাল, চিকিৎসক মোহাম্মদ আল মামুন, স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) হাসান শাহরিয়ার ইকবাল, স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের সৈয়দ সামিন মাহফুজ, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সহকারী মো. আবদুল হাই মল্লিক, সহকারী ব্যক্তিগত সচিব মো. মাসুদুর রহমান, গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম ও গৃহকর্মী রূপা শিকদার।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কেমন

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে কি না জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে ডা. জাহিদ বলেন, ‘আমরা মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শের বাইরে কোনো কিছু চিন্তা করছি না। মেডিকেল বোর্ড গতকাল তিনবার ভার্চুয়ালি বৈঠক করেছেন। ফিজিক্যালি দেখেছেন উনাকে যুক্তরাজ্য ও চীনের ডাক্তাররা।’

আরও পড়ুন:

তিনি বলেন, ‘এ মুহূর্তেও যুক্তরাজ্যের ডাক্তার ও চীনের ডাক্তারদের সাথে আলাপ হয়েছে। আমরা আল্লাহর রহমতে আশাবাদী— ইনশাল্লাহ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আল্লাহর অশেষ রহমতে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন, এবারো ইনশাল্লাহ উনি আবারো আমাদের মাঝে ফেরত আসবেন।’

এভারকেয়ারে খালেদা জিয়ার ১৩ দিন

গত ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্ট নিয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। ৩০ নভেম্বর ভোরের দিকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে এসডিইউ থেকে সিসিইউতে (ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট) নেয়া হয়। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানা গেছে।

দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন তিনি। গত কয়েকদিন থেকেই এ অবস্থার তেমন কোন পরিবর্তন হয়নি।

শুরু থেকেই দেশি-বিদেশি চিকিৎসকরা যোগাযোগ রাখছিলেন মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল (বুধবার, ৩ ডিসেম্বর) রাতে চীন থেকে দেশটির চারজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায় আসেন। রাতেই তারা খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডে যোগ দেন।

এর আগে দুপুরে যুক্তরাজ্য থেকে ঢাকায় আসেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রিচার্ড বেলে। তিনি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। খালেদা জিয়াকে দেখেন।

জানা গেছে, নিয়মিত ডায়ালাইসিসের পাশাপাশি সব ধরনের উন্নত চিকিৎসা পাচ্ছেন খালেদা জিয়া। দেশের চিকিৎসক দলের সঙ্গে চীনের একটি বিশেষজ্ঞ দলও সহায়তা করে যাচ্ছে। পাশাপাশি আমেরিকা, চীন,কাতার, সিঙ্গাপুর, পাকিস্তান, ইন্ডিয়াসহ খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় সর্বাত্মক সহায়তা করছে বলেও জানানো হয়েছে দলের পক্ষ থেকে।

বুধবার সন্ধ্যায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসনের খোঁজ নেন, কথা বলেন চিকিৎসকদের সঙ্গে। প্রধান উপদেষ্টা প্রায় আধা ঘণ্টা হাসপাতালে অবস্থান করেন। এ সময় তিনি খালেদা জিয়ার পরিবার ও দলের নেতাকর্মীদের ধৈর্যধারণের আহ্বান জানান।

গত সোমবার খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ বা ভিআইপি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। সেদিন সন্ধ্যায় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদের মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত হয়। পরে এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ হলে এসএসএফ সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে।

উন্নত চিকিৎসার জন্য গত জানুয়ারিতে লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেখানে প্রথমে হাসপাতালে, পরে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থেকে তিনি চিকিৎসা নেন। প্রায় চার মাস পর গত ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন।


সেজু