রক্তের সম্পর্কের চেয়ে বড় এখন দলীয় প্রতীক

ভাই-বোনের দ্বন্দ্বে উত্তপ্ত নাটোর

ফারজানা শারমিন পুতুল, ইয়াসির আরশাদ রাজন
ফারজানা শারমিন পুতুল, ইয়াসির আরশাদ রাজন | ছবি: এখন টিভি
0

সম্পর্কে তারা আপন ভাই-বোন। অথচ রাজনীতির মাঠে কেউ কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দিচ্ছেন না। ছোট বোন ফারজানা শারমিন পুতুল নাটোর-১ আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় তা বাতিলে মহাসড়কে বিক্ষোভ-সমাবেশ করছে আপন বড় ভাই ইয়াসির আরশাদ রাজনের সমর্থকরা। রাজনীতির কাছে যেন হার মেনেছে রক্তের সম্পর্ক।

এ হাসি আপন ভাই-বোনের। শৈশবের কত মধুর স্মৃতি তাদের। তবে এ সম্পর্কে এখন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনীতির দেয়াল।

নাটোর-১ আসনে বিএনপির রাজনীতির অন্যতম চরিত্র ছিলেন তাদের বাবা সাবেক প্রতিমন্ত্রী ফজলুর রহমান পটল। ২০১৬ সালে তার প্রয়াণের পর স্থানীয় বিএনপির হাল ধরেন তার দুই সন্তান-ছেলে ডা. ইয়াসির আরশাদ রাজন ও মেয়ে ফারজানা শারমিন পুতুল।

৫ আগস্টের পর রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হন রাজন ও পুতুল। সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের জন্য মাঠে নামেন দুই ভাই-বোন। এর মাঝে গত ৩ নভেম্বর নাটোর-১ আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পান ফারজানা শারমিন পুতুল। তবে তা মানতে পারছে না তার ভাই। তার মনোনয়ন বাতিলের পক্ষে চলে বিক্ষোভ। নেতাকর্মীদের সঙ্গে মাঠে থাকবেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘোষণা দেন রাজন নিজেও।

ফারজানা শারমিন পুতুল বলেন, ‘আমরা দুই ভাই-বোনই অত্যন্ত যোগ্য এবং যারা বিএনপি করেছে, ধানের শীষের প্রতীক চাওয়ার অধিকার কিন্তু আমাদের প্রত্যেকেরই অধিকার আছে। রাজনীতিতে অনেক ধরনের স্ট্র্যটেজি থাকতে হয়। আমরা দুই ভাই-বোন একসঙ্গে মাঠে ছিলাম, একসঙ্গে মাঠে আছি। যদি ভাইয়া মনোনয়ন পেতেন তাহলে আমরা একইভাবে একসঙ্গে কাজ করতাম। কিন্তু হ্যাঁ, প্রতিটি জায়গায় কিছু দুষ্কৃতিকারী থাকে যারা এ ধরনের ঘটনাগুলো ঘটানোর চেষ্টা করে।’

আরও পড়ুন:

ডা. ইয়াসির আরশাদ রাজন বলেন, ‘আমি আপনাদের (স্থানীয়দের) সন্তান, আমি এ মাটির সন্তান। আমার কর্মজীবন এখানে, আমার রাজনীতি এখানে। এ মাটির জন্য, এ মানুষের জন্য আমার মৃত্যু হবে এখানে, আমার জানাজা হবে এখানে, আমার দাফনও হবে এখানে।’

নাটোর-১ আসনে রাজনীতি বনাম পারিবারিক সম্পর্কের এ ঘটনা তাই সৃষ্টি করেছে উত্তেজনা। তবে রাজন সমর্থকদের কাছে প্রশ্ন ছিল, একই পরিবার এবং ভাই-বোন তবুও কেন এমন মত পার্থক্য?

রাজন সমর্থকদের মধ্যে একজন বলেন, ‘পুতুলের গ্রুপ না করার কারণে, রাজনের গ্রুপ করার কারণে আমাদের প্রায় ১৩৫ জন ছাত্রদল, যুবদলের কর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটিয়েছে।’

তবে স্থানীয় বিএনপির অনেকের আশা, সমঝোতার মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত ছোট বোন পুতুলের পাশেই থাকবেন বড় ভাই রাজন।

এসএস