জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরই বাংলাদেশের মানুষ মুখোমুখি হয় ভারতীয় রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু দেশটির গণমাধ্যমের অপপ্রচারের।
শুধু যে রাজনৈতিক দল কিংবা গণমাধ্যমই নয় উগ্র হিন্দুত্ববাদী কিছু সংগঠনকেও দেখা যায় বাংলাদেশ নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দিতে। যার অধিকাংশ ঘিরে আছে নানা সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক বক্তব্য।
ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশ নিয়ে নানামুখী বিদ্বেষের চূড়ান্ত রূপ পায় সম্প্রতি আগরতলায় বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনে হামলা ও পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এদেশে শান্তিরক্ষী মোতায়েন বক্তব্যকে ঘিরে।
এরপরই বাংলাদেশের সকল শ্রেণির পেশার মানুষ প্রতিবাদ-বিক্ষোভে সোচ্চার হয়ে উঠে।রাস্তায় নেমে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থাকার ঘোষণা দেয়।
তারই ধারাবাহিকতায় দেশের অন্যতম রাজনৈতিক সংগঠন বিএনপির অঙ্গ সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল রোববার ভারতীয় হাইকমিশনে স্মারকলিপি জমা দেয়। পরবর্তী আগরতলার উদ্দেশ্য লংমার্চে যাত্রা করে।
আখাউড়া সীমান্ত অভিমুখে লং মার্চ ঘিরে সকাল থেকেই দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় নয়াপল্টনের সামনে জাতীয় ও দলীয় পতাকাসহ রঙবেরঙের ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে হাজির হয় দলের নেতা-কর্মীরা। তখন তাদের কণ্ঠে ছিল ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দেয়ার দৃঢ়প্রত্যয়।
লং মার্চ পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন অঙ্গ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। ভারতীয় আগ্রাসন ও দিল্লির পররাষ্ট্রনীতির সমালোচনা।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা রক্ত দিয়ে যে স্বাধীনতা কিনেছি সেই স্বাধীনতা কী আবার বিক্রি করে দেবো? আমরা দিল্লির কাছ থেকে যে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি তা আবার দিল্লির কাছে আমরা আত্মসমর্পণ করব কী?’
পাশাপাশি ভারতের অপরাজনীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার কথাও উঠে আসে তার বক্তব্যে। তিনি আরো বলেন, ‘দিল্লির দাসত্ব এ দেশের মানুষ মেনে নিবে না।’
অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আরো বলেন, ‘ভারতের শাসকগোষ্ঠী গোটা বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর কাছে সমালোচিত। ভারত নিজেরা গণতান্ত্রিক দেশ হয়েও চায় না বাংলাদেশ নিজেদের জনগণের কথায় চলুক। তাদের চাওয়া দিল্লির কথায় চলতে হবে বাংলাদেশকে। তবে তারা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের তেজ ও আত্মশক্তি সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই দিল্লির সাউন্ড ব্লক বুঝতে পারে নাই।’
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে গাড়িবহর নিয়ে আগরতলার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে দলের নেতাকর্মীরা। আখাউড়া স্থলবন্দরে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করেই আগামী দিনে ভারত বাংলাদেশ সম্পর্ক নির্ধারণের বার্তা দেয়া হবে বলেও জানান দলটির কর্মী সমর্থকরা।