কৃষি , গ্রামীণ কৃষি
দেশে এখন
ডায়াবেটিক ধান নামে পরিচিতি পেয়েছে ব্রি-১০৫
ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ব্রি-১০৫ নামে তৈরি হয়েছে নতুন ধান। যা পরিচিতি পেয়েছে ডায়াবেটিক ধান নামে। এই ধানের চালে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের মাত্রা কম হওয়ায় ডায়াবেটিক রোগীরা এই চালের ভাত বেশি পরিমাণে খেলেও শারীরিকভাবে কোনো ক্ষতি হবে না। মূলত পুরনো জাতের ধানগুলোর রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ায় নতুন জাতে ধান চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছে কৃষি বিভাগ।

বরাবরই ডায়াবেটিক রোগীদের ভাত কম খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তবে এবারে বেশি পরিমাণে ভাত খাওয়ার পরেও শারীরিক ভাবে কোনো ক্ষতি হবে না ডায়াবেটিক রোগীদের। এমনই এক ধানের উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট।

নতুন এই ধানের নাম ব্রি-১০৫। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ জুড়ে এখন দোল খাচ্ছে এই জাতের ধান। এবার বোরো মৌসুমে দেশে প্রথমবারের মতো চাষ হয়েছে এই ধানের। মূলত এই ধানের চালে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের মাত্রা কম থাকায় এটি ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ক্ষতিকারক নয়। ফলে এটাকে বলা হচ্ছে ডায়াবেটিক ধান। মূলত এই ধানের চাল চিকন এবং সুগন্ধি।

একজন চাষী বলেন, 'এ ধানের ফলন খুবই ভালো। যাদের ডাযাবেটিক আছে তারা খুশি হয়েছে। এ ধানের ভাত খেলে ডায়াবেটিক কন্টোলে থাকবে।'

পরীক্ষামূলক হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর, কসবা ও নাসিরনগরের ৮০ হেক্টর জমিতে ধান গবেষনা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত নতুন ব্রি-১০১, ব্রি-১০২, ব্রি-১০৪ ও ব্রি-১০৫ এবং ব্রি-হাইব্রিড ৮ জাতের ধান চাষ করেছেন কৃষকরা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে ১০৫ জাতের ধান।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরের কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর কবির লিটন বলেন, 'ব্রি-১০৫ কে মূলত ডায়াবেটিক ধানবলা হয়। কারণ এটিতে শর্করার মাত্রা ৫৫ এর নিচে। ডায়াবেটিক রোগীরা যদি এ চালের ভাত খায় তাদের শারিরীকভাবে কোনো ক্ষতি হবে না। এছাড়াও ব্রি-১০৪ খুব জনপ্রিয় হচ্ছে মাঠ পর্যায়ে। সুগন্ধি এবং চিকন চাল হিসেবে এটি খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছে।'

ফেনীর সোনাগাজীর চর চান্দিয়ার এক কৃষকের জমিতেও চাষ হয়েছে এই ধানের। যেখানে ফলনও হয়েছে ভালো। ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের কর্মকর্তারা বলছেন, এ ধান কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বা জিআইসম্পন্ন হওয়ার কারণে এটিকে 'ডায়াবেটিক চাল' বলা হচ্ছে। যাতে কার্বো হাইড্রেটের পরিমাণও কম।

সোনাগাজী আঞ্চলিক কার্যালয়ের বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কর্মকার বলেন, 'এই চালের জিআই ভ্যালু ৫৫। এ চালের ভাত খেলে সুগার বাড়বে না। ডায়াবেটিক রোগীরা এ ধানের ভাত সহজে খেতে পারবে। এর দানাটাও ছোট ও চিকন।'

নওগাঁর নিয়ামতপুরের ১৯০ বিঘা জমিতে চাষ হয়েছে উচ্চ ফলনশীল জাতের বঙ্গবন্ধু ধান ১০০, ব্রি-১০২, ১০৪ ও ১০৫। যে ধান চাষ করেছেন ৪০ জন কৃষক।

কিছুটা চিকন ও লম্বা জাতের এ ধানের বীজবপন থেকে ফসল তোলা পর্যন্ত সময় লাগবে ১৪৮ দিন। নতুন জাতের ধান হেক্টরপ্রতি পুরনো জাতের তুলনায় অন্তত ৪০০ কেজি বেশি ফলন হবে।

এমএসআরএস