একটা গণঅভ্যুত্থান এবং এর মুখে পালিয়ে যাওয়া কর্তৃত্ববাদী শাসক শেখ হাসিনার ভারতে আশ্রয় নেয়া।
বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর সবচেয়ে বড় পটপরিবর্তনের এই প্রভাব শুধু দেশের রাজনীতিতেই পড়েনি। পাল্টে দিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায় কূটনীতির সমীকরণও। ভারতের ভিসা সেন্টার বন্ধ করে দেয়াসহ ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে যে নানাবিধ জটিলতা চলছে গেল সাত মাস ধরে তাতে সবার নজর ছিল ব্যাংককের দিকেই। কারণ এখানেই বিমসটেক সম্মেলনের সাইডলাইনে বৈঠক হবার কথা বাংলাদেশ ও ভারতের দুই দেশের সরকারপ্রধানের।
আজ (শুক্রবার, ৪ এপ্রিল) স্থানীয় সময় দুপুরে বিমসটেক সম্মেলনের পর সম্মেলনস্থল সাংগ্রি লা হোটেলে অবশেষে সেই কাঙ্ক্ষিত ক্ষণ। অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবেশি দুই দেশের দুই নেতার বৈঠক। ড. ইউনূসের জন্য অপেক্ষারত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুরুতেই স্বাগত জানান বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানকে। শুভেচ্ছা বিনিময় পর্বের পরই শুরু হয়, দুই দেশের কর্মকর্তাদের নিয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক।
প্রায় ৪০ মিনিটের বৈঠকে দুই দেশের জনগণের স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন ড. ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি। এখানে গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর আহ্বান জানান ড. ইউনূস। গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভারতে বসে বাংলাদেশ নিয়ে নেতিবাচক কর্মকাণ্ড করছে, এ নিয়ে নরেন্দ্র মোদির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন প্রধান উপদেষ্টা। আলোচনা হয়, তিস্তার ইস্যু নিয়েও।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, 'বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের সরকার প্রধানের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকটি অত্যন্ত গঠনমূলক ও ফলপ্রসূ হয়েছে। আমাদের সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে।'
বৈঠকের ব্যাপারে এই কর্মকর্তা আরও জানান, সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতেও ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে।
শফিকুল আলম বলেন, 'শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ এবং ভারতে বসে তিনি উস্কানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন, এসব বিষয় বৈঠকে তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া সীমান্তে হত্যা, তিস্তা নদীর পানি বণ্টনসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।'
সম্মেলনের সাইডলাইনে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও বৈঠক হয় প্রধান উপদেষ্টা। এই বৈঠকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে দুই দেশের দুর্নীতিবিরোধী কমিশনের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়।