ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থানের পর, সবার আগে যেসব দাবি উঠে- তা হলো গেল ১৫ বছরের আওয়ামী ফ্যাসিবাদের হাতে ধ্বংস হওয়া সবখাতের সংস্কার। দায়িত্ব নিয়েই অন্তর্বর্তী সরকার ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। যাদের সংস্কার প্রস্তাবনার আলোকে গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
প্রস্তাবনা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত জানতে গত বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) থেকে ঐকমত্য কমিশনের সাথে সংলাপ শুরু হয়। সংলাপের দ্বিতীয় দিনে খেলাফতে মজলিশ ও বাংলাদেশ লেবার পার্টি, কমিশনের সামনে তাদের মত-দ্বিমতের অংশগুলো তুলে ধরে।
বৈঠক শেষে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের জানান, ঐক্যমত্য কমিশনের ১৬৬টি প্রস্তাবনার মধ্যে ১৪০টির সাথে একমত তারা। আর বহুত্ববাদ ও গণপরিষদ নির্বাচনসহ দশটি প্রস্তাবনায় দ্বি-মত প্রকাশ করেছে খেলাফত মজলিশ। এসময়, ইসলামের স্পষ্ট বিধানের বিরুদ্ধে কোনো আইন করা যাবে না বলে দাবি জানায় দলটি।
আরো পড়ুন: নির্বাচনের প্রার্থী হওয়ার বয়স ২১ বছরের বদলে ২৩ করার প্রস্তাব এনসিপির
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমাদ আব্দুল কাদের বলেন, ‘আমরা একটা প্রস্তাব দিয়েছি যে সংবিধানে একটা ধারা থাকতে হবে যে ইসলামের স্পষ্ট বিধানের বিরুদ্ধে কোনো আইন করা যাবে না। সামাজিক ও ধর্মীয় স্থিতিশীলতা রাখতে এটা একান্ত প্রয়োজন।’
এদিকে, লেবার পার্টির সভাপতি জানান, দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের পক্ষে তারা। তবে উভয়পক্ষের মেয়াদ পাঁচ বছর করার প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। তবে, দেশকে চারটি প্রদেশে ভাগের বিপক্ষে অবস্থান নেয় দলটি।
আরো পড়ুন: খেলাফত মজলিসের সাথে বৈঠক করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন
বাংলাদেশ লেবার পার্টির সভাপতি ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, ‘আমরা দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট সংসদের প্রস্তাবনার পক্ষে, তবে চারটি প্রদেশের যে প্রস্তাবনা সেটাতে আমাদের সন্দেহ আছে। এত ছোট একটা দেশ চারটি প্রদেশে বিভক্ত হলে অনেক ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।’
সংলাপের শুরুতে ঐক্যমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ জানান, আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারবে কমিশন।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা মনে করি যে আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা একটা জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে পারবো। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।’
এরআগে, ঐকমত্য কমিশন ৩৮টি দলের কাছে ১৬৬টি প্রশ্নমালা পাঠায়। যার মধ্যে; সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত ৭০টি, বিচার বিভাগ বিষয়ক ২৩টি, দুর্নীতি দমন বিষয়ক ২০টি, জনপ্রশাসনের ২৬টি এবং নির্বাচন সংস্কারের বিষয়ে ২৭ প্রস্তাবনা রয়েছে।