এর আগে নগরীর ধর্মপুর এলাকার পারুল নামে এক নারীর মৃত্যুর খবর পেয়ে সেখানে যান সাংবাদিকরা।
পরে সাংবাদিকের উপর হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ পৌঁছায়। উত্তেজিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে যৌথবাহিনী। পরে আহত সাংবাদিকদের উদ্ধার করে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
ঘটনার পর কুমিল্লায় কর্মরত সাংবাদিকরা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে অবস্থান নেয়। এসময় তারা হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
আহত সাংবাদিকরা হলেন যমুনা টিভির কুমিল্লা ব্যুরো প্রধান রফিকুল ইসলাম চৌধুরী খোকন, ক্যামেরা পার্সন জিহাদুল ইসলাম সাকিব, চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের স্টাফ রিপোর্টার জাহিদুর রহমান এবং ক্যামেরা পার্সন ইরফান। এসময় হামলাকারীরা ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প ও লাঠি দিয়ে যমুনা টিভির দুই সাংবাদিককে মারধর করে এবং ক্যামেরা, মাইক্রোফোন, ট্রাইপড ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে চ্যানেল টোয়েন্টিফোর এর ক্যামেরাপারসনের উপর হামলা চালায় এবং ট্রাইপড ভাঙচুর করে।
আহত যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, 'শুক্রবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভুল ইনজেকশন ব্যবহার করার কারণে ধর্মপুর এলাকার পারুল নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়। 'ভুল চিকিৎসায়' ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে মেডিসিন বিভাগে যাই। এসময় ভবনের চারতলায় উঠলেই বাধা দিয়ে আমাদের উপর অতর্কিতভাবে হামলা করে বেশ কয়েকজন। এসময় মারধর করে ভবনের নিচে নিয়ে আসে।'
জানা যায়, অপর একটি পক্ষ তাদেরকে নিরাপদে নেয়ার চেষ্টা করে এবং খবর পেয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হন। ঘটনার পর হাসপাতালের ভেতরে আরও উত্তেজনা সৃষ্টি হলে যৌথবাহিনী পাঁচ রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছুড়ে।
যমুনা টেলিভিশনের ক্যামেরা পার্সন জিহাদুল ইসলাম সাকিব বলেন, 'আমরা ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে এমন খবর পেয়ে সেখানে যাই। আমি ক্যামেরা চালু করার আগেই আমাদের উপর অতর্কিতভাবে বেশ কয়েকজন যুবক মারধর করে। তাদের হাতে স্টাম্প ও লাঠি ছিল। তারা দুই দফায় আমাদের উপর হামলা করে।'
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মাসুদ পারভেজ এর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিয়ে পাওয়া যায়নি।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. মহিনুল ইসলাম বলেন, 'সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।'
এদিকে কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি মীর শাহ আলম বলেন, 'এটি খুবই নিন্দনীয় একটি ঘটনা। সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় আমাদের কঠোর আন্দোলনে যেতে হবে।'
কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী এনামুল হক ফারুক বলেন, 'এ ধরনের হামলা সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি। আমরা দ্রুত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।'