এক বিবৃতিতে নেতারা বলেন, 'ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির সোমবার (১০ মার্চ) তাদের এক কর্মসূচিতে বক্তব্য প্রদানকালে বলেছেন 'একজন ধর্ষক বা নারী নিপীড়নকারীকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়েছিল ছাত্রশিবির ঢাবি সভাপতি।' তার এই বক্তব্য সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচার । দেশব্যাপী ছাত্রকল্যাণমূলক কাজের জন্য শিক্ষার্থী সমাজের কাছে ছাত্রশিবিরের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছেন।'
বিবৃতিতে নেতারা আরও বলেন, 'ঢাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মূলত ঘটনার সময়ে শাহবাগ থানা কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসনের আহ্বানে শাহবাগ থানায় সৃষ্ট পরিস্থিতি শান্ত করতে এবং সেখানে অবস্থানরত 'সংক্ষুব্ধ জনতা'র দাবি ও অবস্থান জানার জন্য শাহবাগ থানায় যায়৷ তিনি সেখানে কাউকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনতে তদবির করেননি। বরং তিনি সেখানে উপস্থিত মবকে 'অভিযুক্ত অর্ণবকে কোর্টে তোলা যাবে না, এখানেই মুক্তি দিতে হবে' এই দাবি থেকে সরিয়ে এনে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে বোঝাতে সক্ষম হোন।
ছাত্রশিবিরের নেতারা বলেন, 'এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী অস্থিতিশীল অবস্থা ও রাজনৈতিক সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থেকে শাহবাগ থানায় ঢাবি শিবির সভাপতি এস এম ফরহাদ পুলিশ প্রশাসনের কার্যক্রমকে সহযোগিতা করেন এবং অভিযুক্তকে কোর্টে তুলতে সহযোগিতা করলেও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তার বিরুদ্ধে 'থানা থেকে ছাড়িয়ে এনেছে' বলে ঘৃণ্য মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ছাত্রদলের নানা অপকর্ম তথা ছাত্রদল কর্তৃক নারী হেনস্তা, ধর্ষণ চেষ্টা [রাজশাহী সিটি কলেজে ছাত্রদল নেতাদের হাতে লাঞ্ছিত নারী অধ্যক্ষ (১৪ আগস্ট, ২০২৪), বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগে গাজীপুরে ছাত্রদল সভাপতিকে অব্যাহতি (১৪ অক্টোবর, ২০২৪), ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা মামলা (৯ মার্চ, ২০২৫) ইত্যাদি], চাঁদাবাজি, খুন ও অন্তঃদলীয় কোন্দল ও বিশৃঙ্খলাকে ধামাচাপা দিতেই এহেন মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের আশ্রয় নিচ্ছেন।'
বিবৃতিতে নেতারা আরও বলেন, 'সংকটময় মুহূর্তে ছাত্রশিবিরের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধিরা কার্যকরী ভূমিকা রাখলেও সেদিন ছাত্রদলের নীরব ভূমিকা এবং পরবর্তীতে ধারাবাহিক মিথ্যাচার ও উস্কানিমূলক প্রচারণা যথেষ্ট সন্দেহজনক। বৃহৎ সংগঠন হিসেবে ছাত্রদলের উচিত ছিল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এড়াতে শাহবাগ থানায় গিয়ে ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখা। গণঅভ্যুত্থানের সরকারকে সহযোগিতা করার বদলে রহস্যজনকভাবে নীরব থেকে এবং নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে থেকে যেসব ছাত্রনেতা গণঅভ্যুত্থানের সরকারকে সহযোগিতা করেছে তাদের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য মিথ্যাচার এবং অসুস্থ চিন্তা ও বক্তব্য ছাত্ররাজনীতির জন্য কোনো শুভ লক্ষণ নয়। তাই আমরা আশা করি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির তার এই মিথ্যা বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিবেন এবং আগামীতে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এহেন বেফাঁস মন্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকবেন।'—প্রেস রিলিজ