প্রভাতফেরির মিছিল। পূবাকাশে সূর্যোদয়ের পর আলোর তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে দীর্ঘ হতে থাকে মানুষের ঢল। ফুলের বন্যা ছড়াতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই তো আমরাই। শ্রদ্ধায় রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার।
ফুল হাতে বাবা মায়ের হাত ধরে শিশুরা, চোখে মুখে একুশের কৌতূহল আর শ্রদ্ধার চিহ্ন, নরম গালে শহীদ মিনার, এসবই যেন আভাস দেয় নতুন প্রজন্ম একুশেরই উত্তরসূরি।
শিশুদের একজন বলেন, ‘ভাষা শহীদদের জন্য শ্রদ্ধা জানাতে আসছি আমাদের ভাষার জন্য যারা শহীদ হয়েছেন।’
স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও বিষাদগীতির গান গাইতে গাইতে শহীদ মিনারের বেদিতে। তারাই তো একুশের চেতনা ধারণ করে '৫২ থেকে ২৪' এই স্লোগানে ঘটিয়েছে ৫ আগস্টের অভ্যুত্থান। প্রত্যাশা আগামী দিন হবে একুশের।
মাদ্রাসার শিক্ষার্থী বলেন, ‘ভালো লাগছে আমার। এবার প্রথম শহীদ মিনারে এসেছি।’
শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, ‘ভাষার শ্রদ্ধা জানানো উচিত আমাদের।’
আরো পড়ুন: কর্মসংস্থান-পড়াশোনাসহ নানা কারণে বিদেশি ভাষা শেখায় তরুণদের আগ্রহ বাড়ছে
২১ এ ফেব্রুয়ারিতে শুধু বাংলাদেশে নয়, সারাবিশ্বেই পালিত হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। তাই তো দেশে অবস্থানরত ভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতির বন্ধুরাও এসেছেন ৫২'র স্মরণে।
শহীদ মিনারে ফুলের পাপড়ি দিয়ে এই কারুকার্য আবেগের। সুনিপুণ হাতে ফুলের মতোই দেশকে গড়বার প্রত্যয় স্বেচ্ছাসেবকদের।
স্বেচ্ছাসেবকদের ‘একজন বলেন, ফুল দিয়ে মন থেকে শ্রদ্ধা করতে পারছি শহীদদের। বিষয়টা অনেক গর্বের।’
এভাবেই বিভিন্ন বয়সের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের ঢল নামে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। জাতীয় দিবসগুলো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে শেখায় বলে মন্তব্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের।
ঢাবি উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকা জরুরি। এই জাতীয় আয়োজন আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার একটা উপলক্ষ্য তৈরি হয়।’
'ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ দুপুর বেলার অক্ত
বৃষ্টি নামে, বৃষ্টি কোথায়? বরকতের রক্ত।
এই বরকত রফিক সালাম জব্বারের রক্তের বিনিময়ে ১৯৫২ সালে ভাষার যে অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে, তারই চেতনায় পরবর্তীতে ৭১, ৯০ এবং ২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরবর্তী প্রজন্মও এই একই সূত্রে দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার থাকবে, প্রত্যাশা এমনই।