আগের তুলনায় বিশ্ব ইজতেমার নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক বেশি সুদৃঢ়: আইজিপি

দেশে এখন
0

পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম বলেছেন, অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় বিশ্ব ইজতেমার নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক বেশি সুদৃঢ়। যে কোনো ধরনের নাশকতা মোকাবেলা করতে প্রস্তুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আজ (বুধবার, ২৯ জানুয়ারি) সকালে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর এবার ভিন্ন প্রেক্ষাপটে ইজতেমা আয়োজন করা হচ্ছে। লুট হওয়া অনেক অস্ত্র বাহিরে আছে, সমাজে নানান ধরনের বিশৃঙ্খলা ও দ্বিধা আছে, এর প্রেক্ষিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগের চেয়ে অনেক বেশি সুদৃঢ় করা হয়েছে। পাশাপাশি ইজতেমার প্রথম পর্বে আয়োজক কমিটির ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী নিয়োজিত থাকবে।’

এ সময় আইজিপি তাবলিগের বিবদমান দুই গ্রুপের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব কিংবা মতপার্থক্য নেই দাবি করে উভয় পক্ষই শান্তিপূর্ণভাবে ইজতেমা করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।

আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, সা'দ অনুসারীরা ইজতেমা করবেন। আগামীতে উনারা কোথায় ইজতেমা করবেন, কীভাবে করবেন সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য অনেক সময় রয়েছে। আপাতত দুই পক্ষই শান্তিপূর্ণভাবে ইজতেমা আয়োজনের জন্য একমত হয়েছে।

এর আগে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার তথ্য তুলে ধরে বলেন,‘এবারের বিশ্ব ইজতেমায় ৫ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। ৩৩৫টি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পুরো ইজতেমা ময়দান মনিটরিং করা হবে। এছাড়া ১৬টি ওয়াচ টাওয়ার থেকে ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকা পর্যবেক্ষণ করা হবে। সঙ্গে পুলিশের ১৫টি সাব কন্ট্রোল রুম, ২০টি চেকপোস্ট, ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের সমন্বয়ে ফুটপাতে অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হবে।’

ইজতেমা ময়দানে মুসল্লিদের আসা-যাওয়া নির্বিঘ্ন করতে ইজতেমা চলাকালে আশপাশের সড়কে কোনো পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করবে না। আখেরি মোনাজাতে ইজতেমা ময়দানের চতুর্পাশের সড়কে যানচলাচল বন্ধ থাকবে।

শুরায়ী নেজামের আয়োজক কমিটি সূত্র জানায়, এবার শুরায়ী নেজামের অধীনে দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হবে ইজতেমা। প্রথম ধাপ জানুয়ারি ৩১ ও ১, ২ ফেব্রুয়ারি। দ্বিতীয় ধাপ ৩, ৪, ৫ ফেব্রুয়ারি। পুরো বাংলাদেশকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে এবং কে কোন ধাপে অংশগ্রহণ করবে তা ইতিমধ্যে জেলা ওয়ালাদেরকে মুরুব্বীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

প্রথম ধাপে অংশগ্রহণ করছেন- গাজীপুর, টংগী, ধামরাই, গাইবান্ধা, মিরপুর, কাকরাইল, নাটোর, মৌলভীবাজার, রাজশাহী, দোহার, ডেমরা, কাকরাইল, নড়াইল, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, নবাবগঞ্জ, নীলফামারী, দিনাজপুর, রংপুর, বগুরা, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, ভোলা, চুয়াডাংগা, কুষ্টিয়া, যশোর, মাগুরা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, নেত্রকোণা, শেরপুর, ফরিদপুর, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ফেনী, লক্ষিপুর, চাঁদপুর, বি. বাড়িয়া, খুলনা, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, ঝিনাইদহ, চাপাই নবাবগঞ্জ, পিরোজপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, রাজবাড়ি জেলা। এই ধাপে ঢাকার একাংশসহ মোট ৪১ টি জেলা অংশগ্রহণ করছে।

দ্বিতীয় ধাপে অংশগ্রহণ করছেন- যাত্রাবাড়ি, কেরানীগঞ্জ, মোহাম্মাদপুর, মুন্সিগঞ্জ, জামালপুর, মানিকগঞ্জ, জয়পুরহাট, সিলেট, সিরাজগঞ্জ, মেহেরপুর, টাংগাইল, পাবনা, নরসিংদী, সাভার, কিশোরগঞ্জ, কক্সবাজার, নোয়াখালী, গোপালগঞ্জ, ঝালকাঠি, বরগুনা, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, নওগাঁ, বান্দরবন জেলা। এই ধাপে ঢাকার একাংশসহ ২২টি জেলা অংশগ্রহণ করছেন।

শুরায়ী নেজামের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, ‘শুক্রবার বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে শুরায়ী নেজামের অধীনে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম ধাপ। ইতোমধ্যে পুরো ময়দান ও বয়ানের মঞ্চের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা আসতে শুরু করেছেন, বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যে ময়দান কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। রোববার সকাল ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে শুরায়ে নেজামের ইজতেমার প্রথম ধাপ। এরপর ৩ ফেব্রুয়ারি দুপুর থেকে শুরু হয়ে ৫ তারিখ পর্যন্ত হবে দ্বিতীয় ধাপ।’

এএম