'১৫ বছরে ইসলামি ভাবধারার অনেককে জঙ্গি সাজিয়ে হত্যা করা হয়েছে'

দেশে এখন
অপরাধ ও আদালত
0

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, 'বিগত ১৫ বছরে ইসলামি ভাবধারার অনেককে জঙ্গি সাজিয়ে হত্যা করা হয়েছে।'

এদিকে ২০১৬ সালের ২৬ জুলাই রাজধানীর কল্যাণপুর জাহাজ বাড়িতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ৯ জনকে হত্যা মামলায় সাবেক আইজিপি এ কে এম শহিদুল হক ও ডিএমপির সাবেক কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া ও এসপি জসিমউদদীন মোল্লাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আজ (সোমবার, ২৪ মার্চ) বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।

এই তিন আসামিকে ৭ মে হাজির হতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রামপুরায় কার্নিশ ঝুলে থাকা শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন এক মাসের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে।

আজ প্রসিকিউশনের পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর, আব্দুস সোবহান তরফদার, বিএম সুলতান মাহমুদ, গাজী এমএইচ তামিম, শহিদুল ইসলাম, ফারুক আহমেদ ও ব্যারিস্টার মইনুল করিম।

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আজকে সাবেক আইজিপি এ.কে.এম. শহিদুল হক, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া এবং মিরপুর বিভাগের ডিসি মোল্লা মজিবুল ইসলামকে একটি মামলায় হাজির করা হয়েছিল এখানে। প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট হলে আমরা তাকে গ্রেপ্তার দেখায়।’

আওয়ামী দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালের ২৫ জুলাই কল্যাণপুরের জাহাজবাড়ি নামে একটা বাড়িতে নয়জন তরুণকে আটকে রাখে। এরপর সেখানে সোয়াতের টিমসহ গিয়ে তাদেরকে বাসার মধ্যে গুলি করে হত্যা করে। জঙ্গি হত্যা করা হয়েছে বলে প্রচার করে। আমাদের তদন্ত সংস্থা জানতে পেরেছে যে, ওই নয়জন তরুণকে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসা হয়।’

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘সে সময় যারাই একটু ইসলামি ভাবধারার ছিল, তাদেরকেই এভাবে জঙ্গি নাম দিয়ে ধরে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় হত্যা করা হতো। তার আগে ক্রস ফায়ারের নামে যে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডগুলো ছিল, সমালোচনার মুখে সেখান থেকে একধাপ সরে এসে বিভিন্ন বাড়িতে লোকদেরকে আটকে রেখে হত্যা করে জঙ্গি হত্যা নামে চালানো শুরু করে। এরকম অনেক হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তথ্য প্রমাণ তদন্ত সংস্থার হাতে এসেছে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২৬ জুলাই রাজধানীর মিরপুরের কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ৫নং সড়কের অবস্থিত ‘জাহাজ বিল্ডিং’ নামের একটি বাসায় কথিত জঙ্গি আটক অভিযান পরিচালনা করে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

পুলিশের অভিযান চলাকালে ৯ জন ‘জঙ্গি’ নিহত হয়েছে বলে জানানো হয়। সেদিন অভিযান শেষে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তৎকালীন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহীদুল হক।

তিনি বলেছিলেন, ‘নিহত ব্যক্তিরা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য। তিনি দাবি করেন, একটি বড় হামলার পরিকল্পনা করছিলো নিহত জঙ্গিরা যার তথ্য পুলিশের কাছে আগে থেকেই ছিল।’

মিরপুরের আরেকটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন তিন মাসের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।

ইএ