দেশে এখন
0

ঢাকা অচলের ডাক দিয়েছে ঢাবি অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাতে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন। এ নিয়ে আজ (সোমবার, ২৭ জানুয়ারি) ঢাকা অচলের ডাক দিয়েছে ঢাবি অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা। সকল ক্লাস,পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি প্রো-ভিসির পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে তারা। অন্যদিকে সবাইকে ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন প্রো-ভিসি।

রোববার রাত ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে হটাৎ উত্তেজনা। মুহূর্তেই সেটি ছড়িয়ে পড়ে নীলক্ষেত, নিউমার্কেট এলাকায়।

ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সাথে। থেমে থেমে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়। এসময় নীলক্ষেত মোড়, নিউমার্কেট ও ঢাকা কলেজ এলাকার প্রধান সড়কে অবস্থান নেয় দুই পক্ষের শিক্ষার্থীরা। সংঘর্ষে আহত হয় বেশ কয়েকজন।

৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। অন্যদিকে ঢাবির শিক্ষার্থীরা বলছেন, বহিরাগতরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে ক্যাম্পাসে।

ঢাবি শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, ‘রাত ১১ টার সময় তারা এখানে আসে আমাদের প্রো-ভিসির বাসভবন ঘেরাও করবে এইটাতো সভ্য মানুষের কাজ হতে পারে না।’

আরেকজন বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের আগে প্রশাসনকে দেখেছিলাম। তবে তারা নিরব ভূমিকা পালন করেছে। যার ফলে আজকে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে।’

৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, ‘প্রো-ভিসির এমন ব্যবহারে আমাদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। এছাড়া আমাদের যেই দাবি আছে তা ঢাবি কর্তৃপক্ষকে মেনে নিতে হবে।’

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয় শিক্ষার্থীদের। এসময় গ্যাসের পীড়া থেকে রক্ষা পেতে কাঠ পুড়িয়ে বিচ্ছিন্নভাবে অগ্নিসংযোগ করে আন্দোলনকারী। ঘণ্টাখানেক পর পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে সহায়তায় মোতায়েন করা হয় ৪ প্লাটুন বিজিবি।

প্রায় ৩ ঘণ্টা পর নীলক্ষেত এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলে থামে উত্তেজনা। অবশেষে রাত সাড়ে ৩টায় সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সড়ক ছাড়ে ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেখানে আজ ৭ পয়েন্ট অবরোধ করে ঢাকা অচল করার হুঁশিয়ারি দেন। সেসাথে ঢাবির অধীনে সকল পরীক্ষা, ক্লাস বর্জন ও প্রো-ভিসির পদত্যাগ দাবি করেন।

৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, ‘এই দেশের মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এখান থেকে বের হয়ে আসার জন্য আমরা ঢাবির আন্ডারে একটাও পরিক্ষা দিবো না। আজকের পরিক্ষা বয়কট। এছাড়া ঢাকা শহর অচল থাকবে।’

আরেকজন বলেন, ‘প্রো-ভিসি মামুনকে এখান থেকে স্থায়ী বহিস্কার করতে হবে। এইটা যদি তারা না করে সাত কলেজে আর ঢাবি সংঘর্ষ চলতেই থাকবে।’

শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, ‘সাত কলেজের সাত পয়েন্ট দিয়ে ঢাবির কোনো যানবাহন চলবে না।’

অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান প্রো-ভিসি। সেসাথে ২৭ জানুয়ারির সব ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি সুষ্ঠু পরিবেশে ও আলোচনার মাধ্যমে এই ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটবে। শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানাচ্ছি আমি।’

এর আগে ৫ দফা দাবিতে রোববার কয়েকঘণ্টা সাইন্সল্যাব অবরোধ করে রাখে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

ইএ