দেশে এখন
0

জাককানইবি ছাত্রলীগের ১৬ নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার, ৪ জনের সনদ বাতিল

ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যক্রম ও সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনের সনদ বাতিল, একজনের সনদ স্থগিত ও একজনকে স্থায়ী বহিষ্কারসহ মোট ১৬ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এদের সবাই নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।

আজ (মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

রেজিস্টার দপ্তর জানায়, ২০২৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি আবাসিক হলের সিট নিয়ে তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা অনিক ও নাঈম গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্নিবীণা হল ও বঙ্গবন্ধু হলের কক্ষসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর করা হয়। এসব ঘটনার খবর সংগ্রহকালে আজকের পত্রিকার প্রতিনিধি ফাহাদ বিন সাঈদ ও যায়যায়দিন পত্রিকার প্রতিনিধি আহসান হাবিব রিয়াদের উপর ছাত্রলীগ নেতা আবু আব্দুল্লাহ নাঈমের অনুসারীরা হামলা চালায়।

এসব ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ও গত বছরের ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত শৃঙ্খলা বোর্ডের সুপারিশের প্রেক্ষিতে ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৭তম সিন্ডিকেট সভায় জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনা হয়। হামলা-ভাঙচুর ও দফায় দফায় সাংবাদিক মারধরের এ ঘটনায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের একজনকে স্থায়ী বহিষ্কার, দু'জনের সনদ বাতিল, দু'জনের সনদ বাতিল ও স্থায়ী বহিষ্কার, তিনজনকে তিন বছরের জন্য বহিষ্কার, একজনকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার, পাঁচজনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার এবং দু'জনের সনদ এক বছরের জন্য স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

যারা শাস্তি পেলেন তারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ফোকলোর বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবু নাঈম আব্দুল্লাহকে (যাযাবর নাঈম) স্থায়ী বহিষ্কার, সাবেক উপ-কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক আইন ও বিচার বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. সাজ্জাদুর রহমান জয় মোড়ল ও ছাত্রলীগ নেতা লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ তুহিনকে স্থায়ী বহিষ্কার ও স্নাতকের সনদ বাতিল করা হয়েছে।

এছাড়াও সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী লোভন মোখলেছ ও ছাত্রলীগ কর্মী অর্থনীতি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোস্তফা ফাহিম সিরাজির স্নাতকোত্তর সনদ বাতিল করা হয়েছে।

বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার হওয়া নেতাকর্মীদের মধ্যে ছাত্রলীগ কর্মী রেজওয়ানুল কবীর রাব্বি (ইইই বিভাগ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ), আবু রায়হান (লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগ, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ) এবং সৌমিক জাহানকে (চারুকলা বিভাগ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ) তিন বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়।

অন্যদিকে গালিব ফয়সাল নির্ঝরকে (ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ) দুই বছর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সামিউল হক হিমেল (টিপিএস বিভাগ, স্নাতকোত্তর ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ), সাবেক উপশিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ (নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ), নাঈমুল ইসলাম অনিক (আইন ও বিচার বিভাগ, স্নাতকোত্তর ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ), পবিত্র মণ্ডল (পপুলেশন সায়েন্স, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ) ও আব্দুল্লাহ আল শাহরিয়ারকে (চারুকলা, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ) এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

ছাত্রলীগ কর্মী হাবিবুল্লাহ (আইন ও বিচার বিভাগ, স্নাতকোত্তর ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ) স্নাতকোত্তর সনদ ও নয়ন হাসানের (ইএসই, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ) স্নাতক সনদ এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, 'পূর্বের প্রশাসন যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল, সেই তদন্ত কমিটির সুপারিশ এবং যারা হামলার শিকার হয়েছিল তাদের দাবির প্রেক্ষিতে বিষয়গুলো শৃঙ্খলা বোর্ডে আলোচনা পর সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হয়।'

এসএস