সংবিধান-নির্বাচন-পুলিশ ও দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ পাবার পর আজ (বুধবার, ১৫ জানুয়ারি) বিকেলে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টা।
মূলত সংস্কার কমিশনের সুপারিশ কীভাবে সমন্বয় ও বাস্তবায়ন করা হবে সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। জানান, সুপারিশগুলো নিয়ে ফেব্রুয়ারিতে রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করে ন্যূনতম সংস্কারের রোডম্যাপ চূড়ান্ত করা হবে। এরপর তৈরি হবে আইন ও বিধি প্রণয়ন। সে অনুযায়ী চলবে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া।
আসিফ নজরুল বলেন, 'ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরা প্রয়োজনীয় আইন এবং নীতি প্রণয়নের কাজ শুরু করবো। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যখন আলাপ করা হবে এটাই আমরা আইডেন্টিফাই করার চেষ্টা করবো যে ন্যূনতম সংস্কার কোনগুলো আছে এবং এ বিষয়ে রাজনৈতিক মত ঐক্য আচে কি না।'
এ সময় পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, ন্যূনতম সংস্কার শেষে হবে নির্বাচন। ইতোমধ্যেই নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে বলেও জানান তিনি।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, 'এখান থেকে পরবর্তী প্রক্রিয়া কী হতে পারে, এজন্য আগামীকালই একটা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ছয়টি কমিশনের যে কাজের সময়টা, সেটা আমরা আরও একমাস বাড়িয়ে দিবো। গণঅভ্যুত্থানের ফলেই কিন্তু এই প্রক্রিয়াটা শুরু হয়েছে। তারপর রাজনৈতিক দলরা সক্রিয়ভাবে লিখিত বক্তব্য দিয়েছে।'
সংস্কার প্রক্রিয়ার পাশাপাশি বক্তব্যে উঠে আসে জুলাই গণহত্যার বিচারের ইস্যুটিও। উপদেষ্টা জানান, সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়া সমান্তরালভাবে চলবে। পরবর্তীতে রাজনৈতিক দলের বিচারেরও সুযোগ থাকবে।
আসিফ নজরুল বলেন, 'আমরা যে গতিতে এগোচ্ছি, ইনশাআল্লাহ সামনের নির্বাচনের আগেই আমরা অন্তত ট্রায়াল কোর্টে বিচারকাজ সম্পন্ন করতে পারবো। এখানে কারও কোনোরকম গাফিলতি নেই, সুযোগ নেই। আপনাদের কাছে আমাদের প্রতিজ্ঞা, অবশ্যই বাংলাদেশে যে নির্মম, অমানবিক গণহত্যা সংগঠিত হয়েছে, অবশ্যই আমাদের সরকার এটার বিচার করবে। সুষ্ঠুভাবে বিচার হওয়ার পর আমরা এই গণহত্যা মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে দল সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে আমরা যে ধরনের রায় পাবো সেটার আলোকে বহু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার সময় এবং সুযোগ আমরা পাবো।'
সংস্কার জনগণের প্রধান দাবিতে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া জানান, রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও অসংখ্য প্রস্তাব জমা দিয়েছে কমিশনে।
আসিফ মাহমুদ বলেন, 'বাংলাদেশের একটা কাঠামোগত সংস্কারের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল সেটা বাস্তবায়ন হবে। এই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার চিরতরে বিলোপের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে মনে করি। কোনো কোনো সংস্কার কমিশনে এক লাখ মানুষও রেসপন্স করেছে।'
প্রথম ধাপে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের বাকি দুই কমিশন, বিচার বিভাগ ও জনপ্রশাসন, তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে ৩১ জানুয়ারি। দ্বিতীয় ধাপে গঠন করা পাঁচ কমিশনের প্রতিবেদন দেয়ার কথা ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে।