দীর্ঘ ১৫ বছর পর খোল ময়দানে খেলাফত মজলিসের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন। আজ (শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর) সকালে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা দলটির নেতারা বিভেদ নয় ঐক্য, কল্যাণমূলক রাষ্ট্র— এই স্লোগান নিয়ে একত্রিত হয় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।
দলটির অধিবেশনে অতিথি হিসেবে যোগ দেয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, নাগরিক ঐক্য, গণ অধিকার পরিষদ ও ইসলামি আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি। অধিবেশন মঞ্চ রূপ নেয় বিভিন্ন দলমতের মিলনমেলায়।
আয়োজনে অংশ নিয়ে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ইস্পাত-দৃঢ় ঐক্য গঠনের আহ্বান জানান ইসলামি দলগুলোর নেতৃবৃন্দ। ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন ঠেকাতে রাজপথের ঐক্য ধরে রাখার কথা বলেন বক্তারা।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘সকলকে আহ্বান জানাই ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন ঠেকাতে রাজপথের ঐক্য ধরে রাখতে হবে আমাদের।’
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা সকলে কাছাকাছি চলে এসেছি। আমরা সবাই দোয়া চাই যেন আমরা এক হয়ে ইসলামের পক্ষে আওয়াজ তুলতে পারি।’
সভায় ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার আন্দোলন চলমান থাকার কথা বলেন রাজনৈতিক দলের নেতারা। প্রশ্ন তুলেন, গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার অধিকার নিয়ে।
নাগরিত ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে উঠে এসেছিল আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ চাই। যে ভোট কেড়ে নিয়েছিল, গণতন্ত্র কেড়ে নিয়েছিল সেই গণতান্ত্রিক দেম গড়তে চাই।’
ক্ষমতার সিঁড়ি হিসেবে ইসলামি দলগুলোকে সবসময় ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘একটা জিনিসই প্রয়োজন সেটা ঐক্য এর বাহিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আর কোনো ইসলামী দলগুলোর মাথার উপর কাঁঠাল ভেঙ্গে না খেতে পারে সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।’
অধিবেশনে যোগ দিয়ে বিএনপি নেতারা বলেন, দীর্ঘসময় আওয়ামী দুঃশাসনে আতঙ্কিত ছিল দেশের মানুষ। এসময়, আলোচনা হয় নির্বাচন পরবর্তী জাতীয় সরকার নিয়ে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘যারা মানুষের ভোটাধিকার চুরি করেছিল। গুম, খুন ও নির্যাতন করেছিল। ব্যাংক লুট করেছিল তারা আবার ষড়যন্ত্র করছে।’
দলমতের বিভেদ ভুলে কল্যাণকর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঐক্যবদ্ধভাবে সোচ্চার থাকার আহ্বান জানান খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আব্দুল বাসিত আজাদ।
বিশেষ দোয়ার মাধ্যমে শেষ হয় দলটির সাধারণ পরিষদের দ্বাদশ অধিবেশনে কার্যক্রম।