স্বাস্থ্য
দেশে এখন
0

বাসক পাতার রসে দেশেই তৈরি হচ্ছে উন্নত মানের ওষুধ

সাতক্ষীরা থেকেই সরবরাহ হয় ৩০ টন শুকনো পাতা

রাস্তার পাশে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেয় বাসক গাছের পাতা থেকে জার্মান প্রযুক্তির মাধ্যমে সর্দি-কাশির সিরাপ তৈরি করছে দেশের কয়েকটি ওষুধ কোম্পানি। প্রতি বছর শুধু সাতক্ষীরা জেলা থেকে প্রায় ৩০ টন শুকনো বাসক পাতা সরবরাহ করা হচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠানে। এই কাজে কর্মসংস্থান হয়েছে জেলার বহু মানুষের।

বাড়িতে ঘেরা-বেড়া দেয়ার কাজে বেশ জনপ্রিয় বাসক গাছ। সাতক্ষীরা সদর ও আশাশুনি উপজেলার বেশকিছু গ্রাম জুড়ে রাস্তার পাশে প্রাকৃতিকভাবে জন্মায় এই গাছ। আদিকাল থেকেই সর্দি-কাশি সারাতে বাসক পাতার রস ব্যবহার করা হলেও বর্তমানে দেশের বড় বড় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এই পাতা থেকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আধুনিক মানের ওষুধ তৈরি করছে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ি গ্রামের বিউটি বেগম। বাসক গাছ থেকে কাঁচা পাতা সংগ্রহ করে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানিতে বিক্রি করেন। প্রতি কেজি কাঁচা পাতা ৬ টাকা দরে কিনে ৪০ টাকায় কেজিতে শুকনো পাতা বিক্রি করছেন তিনি।

তার মতই এই গ্রামের আরো অনেকে বাসক পাতা সংগ্রহ করে তা রোদে শুকিয়ে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানিতে বিক্রি করেন। কোম্পানির প্রতিনিধিরা সরাসরি গ্রাম থেকে এসব পাতা কিনে নিয়ে যাচ্ছে।

মান ভেদে প্রতি মণ শুকনো বাসক পাতা দেড় থেকে দুই হাজার টাকায় বিক্রি হয়। এর ৬০ শতাংশ পাতা সংগ্রহ করা হচ্ছে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো গাছ থেকে।

বাসক পাতার চাহিদা বাড়ায় নতুন করে অনেক গ্রামের মানুষ বাড়ির চারপাশে বাসক গাছ রোপণ করছেন।

গত ৬ বছর ধরে সাতক্ষীরায় বাসক পাতার এই ব্যবসা চালু হলেও সরকারি উদ্যোগে এখনো বাসক গাছ সংরক্ষণ বা বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করা যায়নি। আগামীতে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির অধীনে বাসক গাছ উৎপাদন বা সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়ার কথা জানালেই সামাজিক বন বিভাগের এই কর্মকর্তা।

সাতক্ষীরা সামাজিক বনায়ন জোনের সহকারী বন সংরক্ষক প্রিয়াংকা হালদার বলেন, গ্রাম্য পর্যায়ে আমি সবাইকে বাসক গাছ লাগাতে উদ্বুদ্ধ করছি। এ গাছের শুকনো বা তাজা পাতা বিক্রি করে তারা যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারবেন তেমনি গাছ বিক্রি করেও লাভবান হবেন।’

বাসকের বৈজ্ঞানিক নাম আঢাটোডা বাসিকা। বাসক গাছের পাতা ছিঁড়লে গাছ মার যায় না। সারা বছরই নতুন পাতা গজানো এই গাছের ডাল কেটে মাটিতে পুঁতে দিলে নতুন গাছ জন্মায়। বাণিজ্যিকভাবে বাসক গাছের চাষ শুরু করা গেলে দেশের ওষুধ শিল্পে অবদান রাখার পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিতেও পরিবর্তন আসবে।

এএইচ