জানা যায়, বানিয়াচং উপজেলার সাদকপুর গ্রামের সিএনজি অটোরিকশা চালক হাফিজ খানের স্ত্রীর প্রসব ব্যথা শুরু হলে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে হবিগঞ্জ শহরের খোয়াই জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পরীক্ষা শেষে জানায় মা ও গর্ভের সন্তান ভালো আছে। রাত ৮টায় প্রসূতিকে সিজারের প্রস্তুতি হিসেবে হার্ডসল স্যালাইন ও ইনজেকশন দেয়া হয়। রাত ১০টায় প্রসূতিকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার পর অ্যানেস্থেশিয়া মেশিন ত্রুটির কথা জানান চিকিৎসক। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় মেশিনের ত্রুটি সমাধানের পর সিজার করা হবে৷
রোগীর অবস্থা খারাপ হলে স্বজনরা তাকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু খোয়াই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় কোনো সমস্যা হবে না। তাদের পরামর্শে রোগীকে তাদের এক নিকট আত্মীয়ের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।
সকালে পুনরায় প্রসূতিকে খোয়াই হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তৃপক্ষ অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। অন্য একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে গেলে আল্ট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে দেখা যায় প্রসূতির গর্ভের সন্তান মারা গেছে।
প্রসূতির স্বামী হাফিজ খান অভিযোগ করে বলেন, ‘রাতে হার্ডসল স্যালাইন ও ইনজেকশন দেয়ার পর অপারেশন করানোর কথা। কিন্তু তারা অপারেশন করেনি। এমনকি আমাদেরকে অন্য হাসপাতালে যেতেও দেয়নি। যে কারণে আমার বাচ্চার মৃত্যু হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সকালে আমি খোয়াই হাসপাতালে গিয়ে কাউকে পাইনি। কর্মচারী ছাড়া সবাই পালিয়ে গেছে।’
খোয়াই হাসপাতালে প্রায় ২ ঘণ্টা অবস্থান করার পরও দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি। এমনকি হাসপাতালের পরিচালক জুয়েল মিয়ার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।
এদিকে বিকেলে শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে সিজারিয়ান পদ্ধতিতে শিশুটির মৃতদেহ খালাস করা হয়।
হবিগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. নূরুল ইসলাম বলেন, ‘ভুক্তভোগীদের বলেছি রোববার একটি লিখিত অভিযোগ দিতে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’