দেশে এখন
0

ময়মনসিংহে ৫৫ পরিবারকে আর্থিক অনুদানের চেক হস্তান্তর

ময়মনসিংহ বিভাগের ৫৫ শহীদ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন। দুপুরে নগরীর টাউন হল মিলনায়তনে অনুদানের চেক হস্তান্তর করে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম ও প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর মুগ্ধসহ অনেকে। প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে দেয়া হয় ৫ লাখ টাকার চেক।

আজ (শনিবার, ৩০ নভেম্বর) সকালে অশ্রুঝরা চোখে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হোন গণঅভ্যুত্থানে শহীদ কিশোর জামান মিয়ার মা মিনারা বেগম। হাত ধরে তাকে আসনে বসান জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। এ সময় ছেলে হারানো বেদনায় স্নিগ্ধকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ।

একইভাবে উপস্থিত হন রাজধানীর উত্তরায় পুলিশের গুলিতে নিহত গফরগাওয়ের কামরুজ্জামানের স্ত্রী। কোলে ৮ মাসের ছেলে গালিব আবরার। শিশুটি এখনো যেন খুঁজে ফেরে বাবার মুখ।

পাশেই শহীদ হওয়া বড় ভাই শাহরিয়ার মতিনের ছবি বুকে নিয়ে অশ্রুসিক্ত ছোটবোন। এমন হাজারও টুকরো গল্পের খণ্ডচিত্রে ভারি হয় ময়মনসিংহের টাউন হল মিলনায়তন। বেদনা সিক্ত হয় জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অর্থ সহায়তার চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠান।

পরিবারের কাছে হারানো স্বজনের স্মৃতিচারণ শোনেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম ও প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। এ সময় ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হতাহত প্রত্যেক পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানানো হয়।

জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বলেন, ‘পাঁচ আগস্টের পরে যারা দায়িত্ব নিয়েছে বাংলাদেশের, তাদের অন্তত একটি শহীদ পরিবারকে সামনে রেখে শপথ বাক্য পাঠ উচিত। তাহলেই তারা বুঝতে পারবে কতটা ত্যাগ ও দুঃখের বিনিময় তারা তাদের দায়িত্ব গ্রহণ করছেন।’

ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেন, এখনও শেখ হাসিনা এবং তার দোসররা চেষ্টা করছে ছাত্রদের ব্যর্থ করতে। জানান, বেঁচে থাকলে শহীদ ও আহত পরিবারে কোনো শকুনের আচড়র লাগতে দেয়া হবে না।

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেন, ‘খুনি হাসিনা ও তার দোসররা সব দিক চেষ্টা করছে আমরা যেন সফল না হই। যদি কোনোভাবে আমরা ব্যর্থ হই, আমরা যারা এখানে রয়েছি কারো অস্তিত্ব খুনি হাসিনা রাখবে না। পাঁচ আগস্টের আগে এমন অনেক পরিবার রয়েছে যারা ঠিকমতো কবর দিতে পারেন নাই, বাড়িতে থাকতে দেয়া হয় নাই, থানায় হয়রানি করা হয়েছে। খুনি হাসিনার দোসররা আসছে আবারো একই কাজ করা হবে।’

ময়মনসিংহ বিভাগে ৯৩জন শহীদ শনাক্ত করেছে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন। এর মধ্যে ৫৫ জনের পরিবারকে ৫ লাখ টাকার অনুদানের চেক তুলে দেয়া হয়। বাকিদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে পরবর্তীতে অনুদানের চেক পৌছে দেয়া হবে বলে জানায় ফাউন্ডেশন।

এএম