দেশে এখন
0

সংসদে আলাদা প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতে সংস্কার কমিশনের কাছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের সুপারিশ

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও দলিতদের পক্ষ থেকে সংসদে আলাদা প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের কাছে সুপারিশ করেছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, দলিত ও প্রতিবন্ধীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা। ভোটার তালিকা নিয়ে আপত্তি থাকায় নতুন করে তাদের ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সুপারিশও করেছে তারা।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন জনপ্রতিনিধি। আর ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসন রয়েছে। তবে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, আদিবাসী, দলিত ও প্রতিবন্ধীসহ অন্য শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্য থেকে আলাদা কোনো প্রতিনিধিত্ব ছিল না বিগত ১২টি সংসদে।

এসব জনগোষ্ঠীর মানুষকে ভোটের আগে এবং পরে প্রভাবশালী দল চাপ প্রয়োগের অভিযোগ তো আছেই। ভোট না দিলে তাদের ওপর হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে বিভিন্ন সময়।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এখন সংস্কারের ঢেউ লেগেছে নির্বাচনী ব্যবস্থায়। আজ (বুধবার, ২৭ নভেম্বর) সকালে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্থার কমিশনের সঙ্গে জাতীয় সংসদ ভবনের কেবিনেট কক্ষে মতবিনিময় সভায় বসেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, দলিত ও প্রতিবন্ধীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা। সংস্কার কমিশনকে সুপারিশ করেন সংসদে তাদেরও আলাদা প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য।

ইনিশিয়েটিভ ফর সোশ্যাল চেঞ্চের নির্বাহী পরিচালক অনিক আসাদ বলেন, 'যারা আদিবাসী আছেন, সে এলাকায় যার অধ্যুষিত এলাকাতে আমরা কোনো ব্যবস্থা করতে পারি কি না যেখানে শুধু আদিবাসী প্রতিনিধিই নির্বাচিত হতে পারবেন, এটা একটা বড় বিষয়। এটা না হলে যে ইনক্লুসিভ বাংলাদেশের কথা বলছি, বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশের কথা বলছি, যেটার জন্য রক্ত দেয়া হয়েছে ৫ আগস্টের আগে পর্যন্ত সেটা কিন্তু প্রতিষ্ঠিত কখনোই হবে না।'

আদিবাসীসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে ভোটার তালিকা নিয়ে আপত্তি প্রতিনিধিদের অনেকের। নতুন করে ভোটার তালিকা হালনাগাদের সুপারিশ তাদের। পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলার তিন আসনে নিরাপত্তার জন্য আলাদা দিনে নির্বাচন গ্রহণের পরামর্শও আসে।

একজন আদিবাসী বলেন, যেহেতু ভোটার তালিকা পার্বত্য অঞ্চলে হালনাগাদ নেই, আগামীতে সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে এটা অন্তরায়।'

এছাড়া দ্বিকক্ষবিশিষ্ট বিশিষ্ট পার্লামেন্ট ব্যবস্থা প্রবর্তন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় ভারসাম্য রক্ষা, দু'বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে না পারা, সরাসরি ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিষয়েও একমত হন সবাই।

সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার জানান, অতীতের সকল অন্যায়, অবিচার দূর করে বৈষম্যহীন সমাজ, রাষ্ট্র গড়ার জন্য কাজ করতে হবে। সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে হবে।

ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, 'সবাইমিলে কিন্তু আমরা স্বৈরাচারের অবসান ঘটিয়েছি। এখন সবাইমিলে আমাদের বৈষম্যের অবসান ঘটাতে হবে। সবাইমিলে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হয়।'

এছাড়া দলীয় প্রতীক ছাড়াই স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ব্যাপারেও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, দলিত, আদিবাসীদের প্রতিনিধিরা সুপারিশ করেন।

এসএস