এদিন সকাল ১০টা ৪২ মিনিটে সেতুর পূর্বপাড়ে লাইন ম্যানের সবুজ পতাকার সিগনালে তিনটি বগি ও দু'টি ইঞ্জিন নিয়ে পরীক্ষমূলক ভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতুতে প্রবেশ করে। প্রথম পর্যায়ে ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন দু'টি পারাপারের পর আধা ঘণ্টা পরপর ২০ থেকে ৩০ ও ৪০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করে।
বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উত্তরে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ৪.৮ কিলোমিটার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু আগামী জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘ টানা চার বছর কাজ শেষে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল সফল হয়েছে। ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে এ কাজে অংশ নিতে পারায় উচ্ছ্বাসিত তারা।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পাকশি অঞ্চলের প্রকৌশলী মো. আব্দুর রহিম বলেন, 'আজকে প্রথম ট্রায়াল অনুষ্ঠিত হলো। ঝাঁকুনি পরীক্ষাসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়েছে। এই সেতুটি উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে।'
তিনি বলেন, 'বঙ্গবন্ধু সেতুর উপর ২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চললেও রেল সেতু চালু হলে ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল হবে। সেতুটি পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রেল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করবে।'
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসউদুর রহমান বলেন, 'সেতুটির কাজ প্রায় পুরোপুরি শেষ হয়েছে। এখন বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছে। সব কিছু ঠিক থাকলে জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।'
প্রকল্প সূত্র জানায়, ২০২০ সালের আগস্ট মাসে ৯ হাজার ৭৩৪.৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পরবর্তীতে এ ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা। যার ১২ হাজার ১৪৯.২ কোটি টাকা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ হিসেবে দিয়েছে। এ প্রকল্পের মূল নির্ধারিত সময় ছিল জুলাই ২০১৬ থেকে ডিসেম্বর ২০২৩। কিন্তু প্রথম সংশোধনে এ সময়সীমা ডিসেম্বর ২০২৪ এ স্থানান্তরিত করা হয়। এর আগে ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়।