এসময়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন,‘কিভাবে স্বতন্ত্র পরিচয় দেয়া যায়? সেজন্য আমরা একটি কমিটি করেছিলাম। এ কমিটিগুলোর প্রতিবেদন জমা দেয়ার কাজ শেষের দিকে। এবার আমরা একটা বিশেষজ্ঞ কমিটি করতে যাচ্ছি। এ কমিটি একত্রিত প্রাতিষ্ঠানিক রূপ তৈরি করে সেখানে কলেজগুলোকে আরো কীভাবে স্বায়ত্তশাসন, সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি, অবকাঠামো বাড়ানো এবং সমন্বিতভাবে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া যায় সে বিষয়ে কাজ করবে। এছাড়া স্বতন্ত্র পরিচয়ের নাম সকলের সঙ্গে আলোচনা করে দেয়া হবে।’
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আরো বলেন, ‘মনে রেখো যে নামই দাও না কেনো আসল কথা হলো শিক্ষার মান উন্নয়ন করা। শিক্ষার বৈষম্য দূর করা। নাম কী দিবে সেটা তোমরাই ঠিক করবে। উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন সবচেয়ে বড় শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে যে কমিটি গঠন করা হবে, তাদের কাজ তোমরা প্রতিনিয়ত দেখতে পারবে। তবে এর জন্য তোমাদের বসে থেকে লাভ হবে না, কারণ অন্তর্বর্তী সরকারের সময় অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। কাজেই কমিটি কবে রিপোর্ট দিবে সেটা নিয়ে তোমরা মাথা ঘামাবে না। আমরা এখন থেকেই নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে পর্যায়ক্রমে কী কী পদক্ষেপ নেয়া হবে সেগুলো এখন থেকেই শুরু করে দিব। যাতে তোমাদের জন্য সবচেয়ে সম্মানজনক একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।’
শিক্ষা উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘’আমাদের অন্তর্বর্তী সরকার শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য যতদূর পারি যথাসাধ্য চেষ্টা করব। প্রধান উপদেষ্টা প্রথমবারের মতো শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করবেন।’
আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে তিনি বলেন, ‘অনেক সংগ্রাম করে রাস্তায় নেমে যারা আহত হয়েছেন, বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছে তাদের দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া করছি এবং যারা নিহত হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। এখন থেকে আমরা আবার আগের শিক্ষার পরিবেশে ফিরে যেতে চাই।’
শিক্ষার্থীদের অবরোধ নিয়ে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘তোমাদের কোনো অভিযোগ থাকলে আমাদের কাছে জানিও। তবে রাস্তা অবরোধ আর নয়, বিশৃঙ্খলা আর নয়, আমরা শিক্ষাঙ্গনে সুষ্ঠু পরিবেশ চাই। যেখানে ছাত্র শিক্ষকদের মধ্যে সুসম্পর্ক ফিরে আসবে।’
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সাতটি কলেজকে ঢাবি অধিভুক্ত করা হয়। কলেজগুলো হচ্ছে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। কিন্তু এই কলেজগুলোর উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য প্রত্যাশিত পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ফলে শুরু থেকেই এখন পর্যন্ত পরীক্ষা ও ফল প্রকাশে বিলম্বসহ নানা ধরনের সমস্যায় জর্জরিত কলেজগুলো। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা তাদের জন্য স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। সব শেষ গত ৬ নভেম্বর শিক্ষা উপদেষ্টার আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করে শিক্ষার্থীরা।