২৪ এর বিপ্লবের জন্যই কি লাইনগুলো লেখা হয়েছিল?
ঝর্ণার মতো চঞ্চল যে তারুণ্যে বানের পানির মতো ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিলো, বীভৎস স্বৈরাচারকে। সে বিপ্লবের রূপ, রস, গন্ধ, আবেগের সবটুকুই যেন ধারণ করেছে দ্রোহের কবির লিখে যাওয়া প্রতিটি লাইন।
বৃটিশবিরোধী আন্দোলন, স্বাধীনতা যুদ্ধ, নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান হয়ে ২৪ এর জুলাই বিপ্লব। বিদ্রোহী নজরুল যেন সমানভাবেই প্রাসঙ্গিক। প্রতিটি আন্দোলনেরই প্রাণ সঞ্চার করছে নজরুলের গান-কবিতা।
গোলামির চেয়ে শহীদী দরজা অনেক ঊর্ধ্বে যেন, চাপরাশির ওই তকমার চেয়ে তলোয়ার বড় মেনো কিংবা কারার ঐ লৌহ কপাট ভেঙে ফেল কর রে লোপাট। যুগে যুগে নজরুলের কবিতা এভাবেই আঙুল তুলেছে কর্তৃত্ববাদী শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।
২৪ এর ছাত্র জনতার বিপ্লবে নজরুলের গান কবিতা কতটা প্রভাব ফেলেছে তা নিয়েই আলোচনা বাংলা একাডেমিতে। প্রধান আলোচক নজরুল গবেষক আবদুল হাই তুলে ধরলেন সেই গল্প। বললেন, জুলাই বিপ্লবের ভাষাই ছিল নজরুলের গান কবিতা।ছাত্র জনতার রাজপথে বুক উঁচিয়ে নামতে যার প্রভাব ছিল অসামান্য।
গেল ১৫ বছরে নজরুলকে আলাদা করে রাখা হয়েছিলো উল্লেখ করে আলোচনায় বাকি বক্তারা বলেন, নজরুল নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে হবে। দাবি ওঠে জাতীয় কবি হিসেবে নজরুলকে সাংবিধানিক স্বীকৃতির।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন,’ভারতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে নজরুলকে সবার সামনে তুলে ধরা হবে।’
তিনি বলেন, ‘সাংবিধানিকভাবে জাতীয় কবি হিসেবে স্বীকৃতির বিষয়টি নিয়েও কাজ করবে সংবিধান সংস্কার কমিশন।’
যে বৈষম্যহীন সমাজের লক্ষ্যে নজরুল ছুটে চলেছেন জীবনভর, ২৪ এর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সেই নজরুলই যেন ছাত্র জনতাকে বলেছিলেন, বন্ধু গো তোল শির! তোমারে দিয়াছি বৈজয়ন্তী বিংশ শতাব্দীর।