দেশে এখন
0

গুলিস্তানের শহীদ মতিউর পার্কে সিটি করপোরেশনের অভিযান

একদিকে রশিদ দিয়ে ফি আদায়, আরেক দিকে উচ্ছেদ অভিযান- এ যেনো স্ববিরোধী আচরণ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের। এটি রাজধানীর গুলিস্তানে শহীদ মতিউর পার্কের ভেতরে অভিযান পরিচালনার ঘটনা। আজ (সোমবার, ১১ নভেম্বর) সকালে হওয়া এই অভিযানে হকারদের ভাসমান গাড়ি ডাম্পিং করে সিটি করপোরেশন। হকারদের অভিযোগ ফি দিয়ে গাড়ি রাখার পরেও ক্ষতিগ্রস্ত তারা। রশিদ দিয়ে টাকা তুলে মালামাল রাখলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানায় সিটি করপোরেশন।

রাজধানীর গুলিস্তানের শহীদ মতিউর পার্কে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের নিয়ে উচ্ছেদ অভিযানে নামে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এতে করে নিয়মিত সিটি করপোরেশনের নামে রশিদ দিয়ে পার্কে মালামাল ও ভ্যান রাখা হকাররা পড়েন বিপাকে।

এক যুবক ইকবাল দীর্ঘ ছয়মাস ধরে দিনপ্রতি ৫০ টাকার রশিদ কেটে মালামাল রাখতেন পার্কে। প্রতিদিনের মতন সোমবার রাতেও একই নিয়মে হকারির মালামাল রেখে বাসায় যান তিনি। তবে সকালের উচ্ছেদ অভিযানে খুইয়েছেন ভ্যান, হারিয়েছেন বিক্রির মালামাল।

ইকবাল বলেন, 'পুলিশ সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযান চলছে এটা। এই অভিযান হবে সেটা আমাদের জানালেই হতো, তাহলে আমরা আর রাখতাম না। দরকার হলে আমরা এটা বাসায় নিয়ে গিয়ে রাখতাম।'

দীর্ঘদিন ইজারাদারের মাধ্যমে পরিচালিত শহীদ মতিউর পার্কের এই উচ্ছেদ অভিযানে ক্ষোভ প্রকাশ করেন হকাররা। নিয়মিত ফি দিয়েও ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার কথা বলেন তারা।

একজন হকার বলেন, 'গতকাল ৫০ হাজার টাকার পণ্য নিয়ে আসছি। এখন আমার গাড়িও গেছে আমার পণ্যও গেছে। সিটি করপোরেশনে টাকা দিয়ে গাড়ি রাখার পরও যদি এই গাড়ি এখন ভাঙে তাহলে এটা বেআইনি না?'

সড়কে করার কথা থাকলেও হকারদের ভাসমান ট্রলির খোঁজে পার্কে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে জানিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, টাকার বিনিময়ে সড়কে বসা হকারদের আশ্রয় দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ডিএমপি'র অতিরিক্ত কমিশনার খন্দকার নজমুল হাসান বলেন, 'যখন আমরা রাস্তায় অভিযান চালাই উনারা চলে যায়, মুহূর্তেই সরে যায়। তাহলে এই গাড়িগুলো যায় কোথায়? এটা কুঁজতে গিয়ে দেখি যে এখানের ভেতরে আসে। এখন উনারা এখানে ইজারা দিয়ে থাকেন না কীভাবে থাকে এই বিষয়টা আমরা জানতাম না। আজকে উনারা টোকেন দেখালো যে প্রতিটা গাড়ির পেছনে ৫০ টাকা করে ইজারাদারের কাছে ইজারা দেন। এটি বৈধ না কি অবৈধ না এই বিসয়টা আমি বলতে পারবো না। এটা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা সম্ভব না। কারণ ইজারাদারকে ইজারা দিয়েছে সিটি করপোরেশন।'

পার্কিং ফি'র মাধ্যমে হকারদের ভাসমান গাড়ি ও মালামাল রাখার কথাটি অস্বীকার করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। সংস্থাটি জানায়, সিটি করপোরেশনের নাম ব্যবহার করে হকারদের জিনিসপত্র রাখলে ব্যবস্থা নেয়া হবে ইজারাদারের বিরুদ্ধে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম বলেন, 'এখান পার্কিংটা দেয়া হয় মোটরসাইকেল পার্কিং। সেখানে তো ট্রলি পার্কিং দেয়ার সুযোগ নেই। আমি মনে করি এই ৫০ টাকার রিসিটের বিষয়টা সিটি করপোরেশনের নলেজের বাইরে। যদি ইজারাদার এটা অবৈধভাবে করে থাকে তাহলে এটা বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।'

রাজধানীর সড়কগুলো হকারমুক্ত করতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করবে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

এসএস