ভাঙ্গায় শিশু ধর্ষণের অভিযোগ, বিচার দাবিতে গ্রামবাসীর বিক্ষোভ

ভাঙ্গায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত দাদা, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ গ্রামবাসীর | Ekhon tv
0

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ১০ বছরের শিশু নাতনিকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে পাশের বাড়ির দাদা দেলোয়ার মোল্লার (৫৫) বিরুদ্ধে। ধর্ষণের ঘটনায় মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাতে সালিশি বৈঠকে প্রভাবশালী দাদা দেলোয়ার মোল্লাকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে স্থানীয় মাতবরেরা। এই ঘটনায় গতকাল (বুধবার, ৯ এপ্রিল) বিকালে ভাঙ্গা উপজেলার নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের হরুপদিয়া গ্রামে ধর্ষক দেলোয়ার মোল্লার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে গ্রামবাসী।

ধর্ষণের ঘটনার সংবাদ পেয়ে ভাঙ্গা থানার ওসি সহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশু ও তার মা-বাবার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে তাদেরকে ভাঙ্গা থানায় নিয়ে আসেন।

ধর্ষণের শিকার শিশুর বাবা রবিউল মোল্লা বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় একটি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান ভাঙ্গা থানার ওসি ।

এই বিষয়ে ধর্ষণের শিকার শিশুর বাবা রবিউল মোল্লা ও তার মা জানায়, সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে আমরা নতুন ধানের শিন্নি রান্না করেছি । পাশের বাড়ির সম্পর্কে দাদিকে শিন্নি দিতে আমার মেয়েকে পাঠাই। দাদি ঘুমানো থাকায় মেয়ে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করার সাথে সাথে তাকে জোরপূর্বক মুখ বন্ধ করে দাদা ধর্ষণ করে।

তারা আরো জানান, মেয়েকে হুমকি দেয়া হয় কাউকে কিছু না বলার জন্য এবং মেরে ফেলার হুমকিও দেয় দেলোয়ার মোল্লা। মেয়েটি বাড়ি এসে পুরো ঘটনা তার মায়ের কাছে বলে দেয় এবং দেখায়।

মেয়েটির মা বলেন, 'বলার মত ভাষা আমাদের নাই। আমরা গরীব মানুষ, আমরা দেলোয়ারের শাস্তি চাই এবং ফাঁসি চাই।'

ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার রাতে দেলোয়ারের বাড়িতে একটি সালিশ বৈঠক হয়। সেখান উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় মাতবরগণের মধ্যে সৈয়দ মোল্লা, সবু মোল্লা, আবু মোল্লা, আয়নাল মোল্লা , আক্তার মোল্লা, আয়নাল মোল্লা প্রমুখ।

সেখানে মাতবররা দেলোয়ারকে দুই লাখ টাকার জরিমানা করেন । পরে আমাকে একটি সাদা স্ট্যাম্পে সাক্ষর দিতে বলে।

আমি সাক্ষর দিতে রাজি না হওয়ায় আমাকে মারধর করে এবং আমাকে আমার মেয়ের চিকিৎসা করাতে নিষেধ করে মাতবরেরা।

মেয়ের অবস্থা খারাপ দেখে পার্শ্ববর্তী পুকুরিয়া বাজারে গিয়ে একটি ঔষধের দোকান থেকে কিছু ঔষধ কিনে মেয়েকে খাওয়াই। বর্তমানে মেয়েটা কিছুটা সুস্থ হয়েছে।

ধর্ষক দেলোয়ার মোল্লা তার ঘরে তালা মেরে গা ঢাকা দিয়েছেন। বর্তমানে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

গ্রামবাসী জানায়, হরুপদিয়া গ্রামের কিছু মাতবররা এই ঘটনা গোপনে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল । তবে ঘটনার সাথে জড়িত দেলোয়ার মোল্লাকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে স্থানীয় মাতবররা। মেয়ের বাবা টাকা না নেওয়ায় তাকে মারধর করেছে দেলোয়ারের লোকজন।

তারা আরো জানায়, পুলিশ আসার সংবাদ পেয়ে এলাকার প্রভাবশালী মাতবররা পালিয়েছে। আমরা গ্রামবাসীরা দেলোয়ারের বিচার সহ শাস্তি দাবি করছি। শিশুর বাবা অত্যন্ত গরিব মানুষ। পরের ক্ষেতে কাজ করেন । ন্যায় বিচারের স্বার্থে আমরা গ্রামবাসীরা শিশুটির পাশে দাঁড়িয়েছি।

এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার ওসি মো. আশরাফ হোসেন জানান, বুধবার বেলা তিনটার দিকে ধর্ষণের ঘটনার একটি সংবাদ পেয়ে ভাঙ্গা উপজেলার নূরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের হরুপদিয়া গ্রামে রবিউলের বাড়িতে পৌঁছাই। ভিকটিম শিশু ও তার মা-বাবার জবানবন্দি রেকর্ড করি। এরপর তাদের সকলকে থানায় নিয়ে আসি। এ ঘটনার আজ দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এসএইচ