বরেন্দ্রের উষ্ণ আর উর্বর মাটিতে মৌসুমভেদে চাষাবাদ হয় হরেক রকম ফল-ফসলের। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে অবদান রাখে সামগ্রিক অর্থনীতিতে। তাই অধিক লাভজনক হওয়ায় অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি খরিপ- ২ মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ বেড়েছে এ অঞ্চলের চাষিদের।
২০২১-২২ অর্থবছর থেকে সরকারি প্রণোদনা আওতায় রাজশাহীর নয় উপজেলায় চাষাবাদ হয়ে আসছে ভারতীয় নাসিক বা এন- ৫৩ জাতের পেঁয়াজ।
গেলো বছরগুলোর দারুণ সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে এবার প্রথমবারের মতো পেঁয়াজ চাষ করেছেন গোদাগাড়ী উপজেলার খেতুর গ্রামের অনেক চাষি।
তবে চারা রোপণের দুই মাস পেরিয়ে গেলেও পেঁয়াজের কাঙ্ক্ষিত বৃদ্ধি না পেয়ে তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। সাথে বিঘায় ৬০ হাজার টাকা খরচের বিপরীতে আশানুরূপ ফলন পাওয়া নিয়েও শঙ্কায় আছেন তারা।
পেঁয়াজ চাষিদের একজন বলেন, ‘কি হবে আমরা জানি না। এই পেঁয়াজে বেশি খরচ পরছে।’
সরকারি প্রণোদনার বীজে এবার জেলার ৩ হাজার ৭৩৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে এ জাতের পেঁয়াজ। তবে অধিক লাভজনক হলেও এবার বৈরী আবহাওয়া ও অতিবৃষ্টি সহ নানা জটিলতায় আবাদ পরিচর্যা ও উৎপাদন খরচ দুটোই লেগেছে বেশি। তাই কাঙ্ক্ষিত ফলন ও বাজার দর পেলেই তা পোষানো সম্ভব, বলছেন চাষিরা।
এদিকে পেঁয়াজ বীজের গুণগতমান অনুসন্ধানের পাশাপাশি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন ও চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানের কথা জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
রাজশাহীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোছা. উম্মে সালমা বলেন, ‘কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে সরাসরি মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানের কার্যক্রম চলমান আছে।’
ভারত থেকে আমদানিকৃত বীজের উৎপাদন ক্ষমতা ও আর্দ্রতা সহ বিভিন্ন যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শেষে এর মান নিশ্চিত করা হয়েছে, তাই বীজে কোন সমস্যা নেই, বৈরী আবহাওয়ার কারণেই পেঁয়াজের কাঙ্ক্ষিত ফলন ব্যাহত হয়েছে বলে জানান বিএডিসির এই কর্মকর্তা।
রাজশাহী বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের উপ-পরিচালক কে. এম. গোলাম সরওয়ার বলেন, 'গত বছরের থেকে এবার একটু ফলন কম। কৃষকদের প্রতি শতাংশে ১ কেজি ইউরিয়া সার দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।'
এ অর্থবছরে সরকারি প্রণোদনার আওতায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে দুই ধাপে জেলার ২৮ হাজার জন কৃষকের মাঝে ২৮ হাজার বীজ, ৩৬০ টন করে ডিএপি ও এমওপি সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬০ হাজার টন গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ।