অপরাধ ও আদালত
দেশে এখন
0

সন্ধ্যার পরই শুরু হয় সর্বস্ব কেড়ে নেয়ার হামলা

ছিনতাই এখন নিত্যদিনের ঘটনা রাজধানীতে। ভাগ্যক্রমে ছিনতাইকারীর হাত থেকে বেঁচে গেলেও ডেকে পাওয়া যাচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের, এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। দফায় দফায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান পরিচালনা করলেও বহাল তবিয়তে অলিগলি দাপড়ে বেড়াচ্ছে ছিনতাইকারী চক্র।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে তুরাগ নদীর তীরবর্তী ওয়াকওয়েতে। রাত হলেই চাপাতি, দা ছুড়ি দিয়ে প্রতিনিয়ত নিম্ন ও মধ্যে আয়ের মানুষের কাছ থেকে কেড়ে নিচ্ছে সর্বস্ব এসব চক্র।

দিন চারেক আগে কথা। সন্ধ্যার পর তুরাগ পাড়ে বসে ছিলেন চার বন্ধু। ঠিক তখনই ছিনতাইকারীর আক্রমণ শিকার হন। পরে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের সহায়তায় থানায় গেলেও লাভ হয়নি। সেই ছাত্রের মতে, ঘটনাটির বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথাযথ ব্যবস্থা না নিয়ে নানা অজুহাত তুলে ধরেন।

ছিনতাইয়ের কথা এই এলাকায় জানে সবাই। সাহস হয়না প্রতিবাদ করার। শুধু এই এলাকা নয় ছিনতাই আতঙ্কে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান, একতা, নবোদয়, নবীনগর ও শ্যামলী হাউজিং। ছিনতাইকারীদের মদদ দাতাদেরও চেনে এই এলাকার সবাই। ভয়ে মুখ খোলে না কেউ। হামলা হলে তো প্রতিকার নেই।

ছিনতাইকারীদের একটি বড় অংশের ঠিকানা বিহারী ক্যাম্প এ অভিযোগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। এছাড়া প্রায় প্রতিনিয়ত সংঘর্ষ লেগেই থাকে বিহারী ক্যাম্পে। পুলিশও খুঁজে পাচ্ছে না সমাধানের পথ। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আঁতুড়ঘর হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদপুরে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কঠিন বলছে খোদ পুলিশ। তবুও চলছে চেষ্টা।

মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইফতেখার বলেন, ‘মোহাম্মদপুর হলো ক্রাইম জোন বা হাব। এখানে বড় বড় ক্রিমিনালের জন্ম হয়। ঢাকা শহরের শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকার মধ্যে পাঁচ থেকে ছয়জনের মতো পাওয়া যাবে, যাদের বেড়ে ওঠা এই মোহাম্মদপুর এলাকায়। যা একটি আশঙ্কাজনক বিষয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘এই এলাকার মধ্যে থাকা জেনেভা ক্যাম্পের অনেক জীবিকার তাগিদে এসব অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। অন্যদিকে রায়েরবাজার কেন্দ্রিক যে-সব স্যাটেলাইট টাউনগুলো দ্রুততার সঙ্গে বড় হয়ে উঠেছে। বর্তমানে আমাদের আগের তুলনায় জনবলের ঘাটতি রয়েছে। এরই সুযোগে অপরাধ মাত্রা বেড়েছে।’

ডিএমপির দেয়া তথ্য বলছে, আগস্টে মাত্র ৩ টি ছিনতাইয়ের ঘটনার অভিযোগ এসেছে থানায়, সেপ্টেম্বরে অভিযোগের সংখ্যা ছিল ১১টি ও অক্টোবরে ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে এখন পর্যন্ত মাত্র ১৩ টি।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ‘আমরা ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার কাজ করে যাচ্ছি। এরইমধ্যে অনেক ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার হয়েছে। তাদের কাজ থেকে আমরা ছোরা ও চাপাতিসহ দেশিয় বিভিন্ন অস্ত্র উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি।’

ছিনতাই চক্রের মূল হোতাদের গ্রেফতার করা না গেলে সমাধানের পথ খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করে অপরাধ বিশ্লেষকরা।

এএম

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর