দেশে এখন
0

'আওয়ামী লীগের সর্বগ্রাসী হস্তক্ষেপেই অর্থনৈতিক অবস্থা ভঙ্গুর'

দেশের ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থার পেছনে আওয়ামী লীগের সর্বগ্রাসী রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছিলো, সিজিএসের অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের আলোচনায় এমন দাবি করেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তাই রাষ্ট্র, নির্বাচন কিংবা সংবিধানের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সংস্কারকে সমানভাবে গুরুত্ব দেয়ার কথা বলছে শিক্ষার্থীরা। ব্যবসায়ী ও অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থনৈতিক বিনিয়োগ ও সামাজিক মূলধন বাড়ানোর পাশাপাশি সংস্কার করতে হবে অর্থ সংশ্লিষ্ট সবগুলো খাত।

গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের যখন পতন হয় তখন বাংলাদেশে চলছে রিজার্ভ সংকট। সংকট কি শুধু রিজার্ভেই? ব্যাংকখাতে নাজুক অবস্থার পাশাপাশি বাংলাদেশের ঘাড়ে তখন ১৮ লাখ কোটি টাকার ঋণ।

অভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রতিশ্রুত সংস্কারে গতি আনতে নানামুখী আলোচনা চললেও অর্থনৈতিক সংস্কারের বিষয়টি থেকে যায় আড়ালে। এ অবস্থায় রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরতে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ - সিজিএস এর এই সংলাপের আয়োজন।

আলোচনায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা বায়বীয় সংস্কার না করে সার্বজনীন সংস্কারের দিকে মনোযোগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগের অপর্যাপ্ততা, জ্বালানি ও ব্যাংক খাতে অব্যবস্থাপনা, অর্থপাচার, ডলার সংকটসহ অর্থনীতির নানা সমস্যা সংলাপে উঠে আসে।

এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, সঞ্চয় যদি কমে যায়, তাহলে বিনিয়োগ কই থেকে বাড়বে? আর্থিক মূলধনের আগে দুইটা জিনিস জরুরি। একটি হলো দেশের সঞ্চয় বাড়তে হবে এবং সামাজিক মূলধনের ঘাটতি থাকতে পারবে না।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, ‘যেহেতু আমাদের রিজার্ভের কথা বলছি, রেমিট্যান্স এনকারেজের কথা বলছি, এখানে কস্ট অব মাইগ্রেশন কমাতে হবে। অবৈধভাবে যে মাইগ্রেশন হয় সেটি যেন আমরা কমাতে পারি।’

অর্থনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, ‘আমি এই মুহূর্তে একটি ব্যাংকের সঙ্গে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে যুক্ত আছি। আপনি জেনে অবাক হবেন যে, তাদের ঋণ দেয়া হয়েছিল এজন্য তারা কখনো ঋণটা ফেরত দেবে না। এটা কোনো ব্যাংকিং থিওরিতেই আসেনা।’

অর্থনৈতিক মুক্তি বা উন্নয়নে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর উপর রাজনৈতিক বিবেচনার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

তিনি বলেন, ‘আগের সরকার সংকোচনমূলক পদক্ষেপের কথা বলে গোপণে টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছেড়েছে। তাদের কথা আপনারা কীভাবে বললেন না একবারো।’

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দল তাদের ওপর যখন আমরা রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের কথা আমরা বলি আমাদের এটা মনে রাখতে হবে এর অর্থনৈতিক তাৎপর্য আছে। এছাড়াও আগামী দিনে সঞ্চয়, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির ক্ষমতার ওপরও আমরা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করছি।’

চলমান রাষ্ট্র সংস্কারে অর্থনৈতিক মুক্তি অগ্রাধিকার না পেলে সংস্কারের পুরো প্রচেষ্টাই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে বলে সতর্ক করেন বক্তারা।

এএইচ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর