দেশের কারাগারগুলোতে বর্তমানে বন্দি ধারণ ক্ষমতা ৪২ হাজারে মতো। তবে এখন বন্দী আছে ৫২ হাজারের কিছু বেশি। ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি বন্দি থাকায় গাদাগাদি করেই থাকতে হয় বন্দি ও কয়েদিদের। এরপর আছে পুরোন আর জরাজীর্ণ ভবন। কারা অধিদপ্তরের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৫ জেলায় নতুন কারাগার নির্মাণ কাজ চলছে। কোনটির কাজ চলছে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে চলছে। একটি প্রকল্পের কাজও নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে পারেনি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
দেশের কারাগারগুলো কতটা অরক্ষিত তা বোঝা গেছে সাম্প্রতিক সময়ে। গত জুনে বগুড়া জেলা কারাগারের কনডেম সেল থেকে চার আসামি পালিয়ে যায়। এছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে নরসিংদী জেলা কারাগার থেকে ৮২৬ বন্দি পালিয়ে যায়।
অপরাধীকে সাজা প্রদানের জন্যে আটক রাখা কিংবা সমাজ-সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার ধারণা বহু পুরানো হলেও বর্তমান পৃথিবীতে কারাগার ব্যবস্থা সংশোধনমূলক তত্ত্ব নির্ভর। যেন অপরাধীরা সংশোধনের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবন যাপনে আসতে পারে।
এ ধরনের বিভিন্ন বিষয় সামনে রেখে ল রিপোর্টার্স ফোরাম কারাগার সংস্কার বিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করে। যেখানে উঠে আসে দেশের কারাগারগুলোর চালচিত্র। বর্তমানে দেশের সব কারাগারে স্বাভাবিক পরিবেশ রয়েছে জানিয়ে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, ‘সরকারের প্রভাব থাকায় কারা কর্তৃপক্ষ নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারেন না।’
কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহার হোসেন বলেন, ‘বাহিরের অদৃশ্য শক্তির কারণে কারা মহাপরিদর্শকরা যেভাবে কারাগার চালাতেন চান সেভাবে চালাতে পারেন না।’
অ্যাডভোকেট শিশির মনির বলেন, ‘হাইকোর্ট থেকে চূড়ান্ত রায় না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে কনডেম সেলে রাখা যাবেনা।’
সেমিনারে অংশ নিয়ে গণপূর্ত উপদেষ্টা বলেন, ‘গত ১৫ বছর কারাগার সংস্কারে কোনো কাজ হয়নি। আইন সংস্কার কমিশন কারাগার সংস্কারে কাজ করবে।’
গণপূর্ত বিষয়ক উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘যারা কারাগারে থাকেন তাদের আইনগত পরামর্শ দরকার হয়। এই জায়গাটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংস্কার করা হবে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার চায় আদালতে যেন নির্যাতিত মানুষের সংখ্যা কমে যায় এবং গুম হওয়া মানুষের পরিবার যেন সঠিক বিচার পায়।’