দেশে এখন
0

পাখি পালন করে সফল জামালপুরের উদ্যোক্তা

শখের বসে পাখি পালন করে সফল হয়েছেন জামালপুরের এক উদ্যোক্তা। শুরুটা ভালো না হলেও কঠোর পরিশ্রম ও সঠিক পরিকল্পনায় ধীরে ধীরে সফলতার স্বপ্ন বুনেছেন, যা দেশের গন্ডি পেরিয়ে সুনাম ছড়িয়েছেন বিদেশের মাটিতেও। অর্জন করেছে পাখি ভাই খ্যাতি। প্রাণিসম্পদ অফিস বলছে, পরিকল্পনা মাফিক সৌখিন পাখির খামার করলে বছরে ভালো টাকা আয় করা সম্ভব।

সদর উপজেলার তিতপল্লা ইউনিয়নের সুলতান নগরের বাসিন্দা তারা মিয়া গ্রামের সবার কাছে পরিচিত পাখি ভাই নামে। শখের বসে শুরু করেছিলেন তিন জোড়া কবুতর ও দুই জোড়া বাজরিগার পালন। পরে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা মুলধন খাটিয়ে বাণিজ্যিকভাবে পাখি পালন শুরু করেন। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।

নোমান রেজা তারা মিয়া বলেন, 'বেকার বসে ছিলাম। পরে চিন্তা করলাম যে চাকরি করার চেয়ে খামারে ভালো লাভ করা যায়। পাখির বর্তমান যে বাজার তাতে দেখা যায় পাখি বাজারে বিক্রি করলে প্রতিমাসে খরচ বাদে লাখ টাকার মতো আমার আসে।'

প্রথমে ঘরের বারান্দায় পালন শুরু করলেও এখন প্রায় ৪০ শতক জমিতে পাঁচটি সেডে পাখি ও কবুতর পালন করছেন তারা মিয়া। খামারে এখন লুটিনো, কগাটেল, এক্সিবিশন বাজরিগার, জাপানিজ বাজরিগার, লোটিনও বাজরিগার, ক্লাসিক্যাল বাজরিগার, লাভ বার্ড জাইনসহ বিভিন্ন ধরনের পাখি রয়েছে। যার প্রতি জোড়া বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে প্রকারভেদে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত। আর কবুতরের মধ্যে আছে ব্ল্যাক বোম্বাই, হোয়াইট বোম্বাই, জাহিন হোমার, বিউটি কুমার, ড্যানিশ কিং, লাহোরী, সিরাজী লক্ষাসহ অনেক জাত। প্রতি জোড়ার দাম এক হাজার টাকা থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

খামারের এসব পাখি ও কবুতর দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও বিক্রি হচ্ছে। সবমিলিয়ে তারা মিয়ার মূলধন প্রায় ৫০ লাখ টাকা। আর খামার থেকে প্রতিমাসে আয় হচ্ছে দুই থেকে তিন লাখ টাকা। তারা মিয়ার সফলতায় অনুপ্রাণিত হয়ে এলাকার অনেকেই পাখির খামার করতে আগ্রহী হচ্ছেন।

স্থানীয় একজন যুবক বলেন, 'তারা ভাইকে দেখে আমি উদ্ভূত হয়েছি। আমি নিজে একটি ছোট কবুতরের খামার তৈরি করেছি। গ্রামের এবং আশেপাশের অনেক লোকই এখন আগ্রহী হয়েছে। এই পাখি কবুতর পেলে লাভবান হচ্ছে।'

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস জানায়, পাখিদের ভ্যাকসিন প্রদানসহ সব ধরনের টেকনিক্যাল সহযোগিতা করা হচ্ছে খামারিদের। এছাড়া জেলার দেড় শতাধিক খামারে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। স্বল্প পুঁজিতে অধিক লাভ হওয়ায় অনেকেই এগিয়ে আসছেন বাণিজ্যিক খামার করতে।

জামালপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, 'শিক্ষিত, উদ্যোমী অনেক যুবক কবুতরের খামার করে লালনপালন করে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে তাদের বিভিন্ন কারিগরি পরামর্শ, ভ্যাকসিন এবং টেকনিক্যাল সহযোগিতা আমরা করে থাকি।'

বেকারত্ব দূর করতে বাণিজ্যিক পাখির খামার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

এসএস