বাজার
দেশে এখন
0

বেধে দেয়া দামে খুচরা-পাইকারিতে মিলছে না ডিম

প্রশাসনের অভিযানের মুখে গত ৩ দিন ধরে চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর বেশিরভাগ ডিমের আড়ত দিনেরবেলা বন্ধ রাখছেন বিক্রেতারা। তাদের অভিযোগ, উৎপাদক থেকে ডিলার হয়ে কয়েক হাত ঘুরে ডিম আসে চট্টগ্রামে। আড়তে আজ কিছুটা কমেছে ডিমের দাম। যদিও খুচরা বা পাইকারি কোথাও এখনো ডিম মিলছে না সরকার নির্ধারিত দরে।

চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে ডিমের সবচেয়ে বড় পাইকারি আড়ত। এখনকার এমন ১৫/১৬ টি আড়ত থেকে প্রায় ৩০ লাখ ডিম যায় নগরীর বিভিন্ন খুচরা দোকানে।

গতকাল (বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টেবর) দুপুরে কয়েকটি ট্রাক ভর্তি ডিম দেখা মিলে এ আড়তে। শ্রমিকরাও কর্মব্যস্ত। এ চিত্র বলে দেয় সরবারহে খুব একটা সংকট নেই।

প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, দেশে ২০২৩ -২৪ অর্থবছরে ডিম উৎপাদন হয়েছে ২ হাজার ৩৭৫ কোটি পিস। অর্থাৎ প্রতি জনের জন্য বছরে ১৩৫ টি। আর বছরে একজন মানুষের গড়ে ডিম প্রয়োজন ১০৪ টি। সে হিসাবে ৩১ পিস ডিম বেশি উৎপাদন হয়েছে, চলছে ভারত থেকে আমদানিও।

তবুও নাগাল টানা যাচ্ছে না দামে। তবে আজকের বাজারে কিছুটা স্বস্তির খবর দিচ্ছেন পাইকার বিক্রেতারা। বলছেন, ২ দিন আগে প্রতিশত ডিম ১২৮০ থেকে ১৩০০ টাকায় সংগ্রহ করেছেন তারা। আজ ৪০ টাকা কমে ১২৪০ টাকায় কিনতে পেরেছেন। তবে এখনও তা সরকারি বেধে দেয়া দর থেকে বেশি ৷

সরবারহে খুব একটা সংকট নেই আড়তে। কর্মব্যস্ত শ্রমিকরা। ছবি: এখন টিভি

ডিম বিক্রেতাদের মধ্যে একজন জানান, 'খরচ ৪০% এইজন্য আমরা ৪০% লাভে বিক্রি করছি। যেমন আমার ১১ টাকা ৮০ পয়সা কেনা। খরচ ১২ টাকা ২০ পয়সা। বিক্রি করতেছি ১২৪০ করে।'

তবে প্রশাসনের টানা অভিযানের মুখে পাহাড়তলী বাজারে বেশিরভাগ আড়তই দিনের বেলা বন্ধ থাকছে। স্থানীয়রা বলছেন, সন্ধ্যার পর ট্রাক আসলে আড়ত খুলেন তারা। আড়তদারদের দাবি, উৎপাদক পর্যায় থেকে ডিলার হয়ে কয়েক হাত ঘুরে ডিম আড়তে আসে। পুরো এ সরবরাহ প্রক্রিয়ায় নজরদারি করা না হলে দাম কমানো সম্ভব নয়। তাদের দাবি, কম দামে ডিম সংগ্রহ করতে না পেরে বেচাবিক্রি বন্ধ রেখেছেন তারা।

চট্টগ্রামের খুচরা বাজারে ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা ডজনে, যা সরকার নির্ধারিত দামের চাইতে ২৬ টাকা বেশি৷ তবে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারিতে আজ দাম কমায় প্রভাব পড়বে খুচরা বাজারেও।

ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজন বলেন, 'অভিযানের কারণে বন্ধ রাখেনি । মাল কিনতে হয় ১৩৩০ টাকা দিয়ে। কিন্তু সরকারি রেট দিয়েছে ১১০১ টাকা। তাহলে আমরা কীভাবে বিক্রি করবো। যারা কিনে আনছে তারাই এখন লস খাইতেছে।'

ক্রেতাদের মধ্যে একজন জানান, বাজারে গেলে এখনও মনে হচ্ছে ডিমের সংকট। তাই ডিমের সংকট দূরীকরণে সরকারকে সার্বিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

সরকারি হিসাবে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশে ডিম উৎপাদন হয়েছে ১ হাজার ৩৫২ কোটি পিস। সে হিসাবে, গত ৬ বছরে ডিমের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৩৪ শতাংশ। তবে ক্ষুদ্র খামারি থেকে হাত বদল হয়ে ডিম ও মুরগির বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বড় বড় কিছু গ্রুপ।

এফএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর