দেশে এখন
0

খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে দেশের ৩৫ শতাংশ মানুষ

বৈষম্য রোধে খাদ্য অধিকার আইন করার দাবি

বিশ্বে এখনো প্রতি ৮ জনে ১ জন প্রতিদিন না খেয়ে ঘুমাতে যায়, যেখানে বাংলাদেশে এ সংখ্যা দ্বিগুণ। দেশের ৩৫ শতাংশ জনগণ এখনও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায়। পুষ্টিহীনতার কারণে দেশে বছরে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়। তাই খাদ্য বৈষম্য রোধে খাদ্য অধিকার আইন করার দাবি তরুণদের। বিশ্লেষকরা বলছেন, সকল শ্রেণির মানুষের পুষ্টি নিশ্চিত করতে প্রয়োজন, খাদ্য পণ্যের দাম কমানো।

ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি। ক্ষুধা আর খাদ্য নিয়ে আলোচনা ক্রমেই জটিল হয়ে উঠেছে সমাজে। এখনও সারাবিশ্ব প্রতি ৮ জনে একজন প্রতিরাতে ঘুমাতে যায় না খেয়ে । আর বাংলাদেশের হিসেবে সেটি দ্বিগুণ।

তবে এখন খাদ্য কেবল ক্ষুধার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। পূর্ণ পুষ্টি আর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা খাদ্যের অন্যতম শর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে । খাদ্যের অধিকার নিশ্চিত করতে ১৯৭৯ সালের ১৬ অক্টোবর থেকে পালন হয়ে আসছে বিশ্ব খাদ্য দিবস।

এবারে বিশ্বখাদ্য দিবসের স্লোগান, উন্নত জীবন ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য খাদ্যের অধিকার। কিন্তু আমরা যা খাই তা কতটা নিরাপদ সেটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

হাংগার ফ্রি ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আতাউর রহমান মিটন বলেন, পেট পুড়ে খেয়েছে, কিন্তু শুধু ভাত আর আলু খেয়েছে। কার্বোহাইড্রেট খেয়েছে। কিন্তু অন্যান্য যে ভিটামিন ও মিনারেল দরকার সেটা তো আমি নিতে পারি নি। যে কারণে বাংলাদেশের অধিবাসীদের মধ্যে ভিটামিন এ ডেফিসিয়েন্সি অনেক প্রকট। আয়রনের ঘাটতিও অনেক বেশি।’

আইসিডিডিআরবি এর তথ্য মতে, ৩৫ শতাংশ জনগণ এখনো খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। গুরুতর অপুষ্টিতে ভুগছে ছয় লাখ শিশু। বিবাহিত নারীর এক-তৃতীয়াংশ কম ওজনসম্পন্ন ও প্রসবকালীন জটিলতায় ভোগে। অপুষ্টি জনিত কারণে প্রতিবছর বাংলাদেশের প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়। যা উৎপাদনশীলতা হ্রাসের অন্যতম কারণ বলছে বিশ্লেষকরা।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে এক বছর বয়সী আয়রাতের দুরন্ত শৈশব নিশ্চিত করতে তার বাবা মায়ের সর্বদা নজর পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবারের দিকে। অন্যদিকে বেগুনবাড়ি বস্তিতে একই বয়সী মরিয়মের খাবারে নেই পুষ্টি উপাদান। তাহলে কীভাবে নিশ্চিত হয় খাদ্য অধিকার?

এমন বৈষম্য রোধে খাদ্য অধিকার আইন করার দাবি উঠে এসেছে তরুণদের কণ্ঠে।

শুধু রঙিন সবজি আর সমৃদ্ধ খাবার খেলেই পুষ্টি নিশ্চিত করা যায়না। সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করলে রান্নার সময় নষ্ট হয়ে যায় অনেক পুষ্টিগুণ। এমনটাই বলেছিলেন রন্ধন বিশ্লেষকরা।

সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয়। ধান উৎপাদনে চতুর্থ। আলু উৎপাদনে বিশ্বের ষষ্ঠ। অনেক খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা মিলেছে দেশে। তাহলে কেন খাদ্যের এতো সংকট?

বিশ্লেষকরা বলছেন, সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের পুষ্টি নিশ্চিত করতে প্রয়োজন, খাদ্য পণ্যের দাম কমানো। আশ্চর্যের বিষয়, শুধু স্বল্প আয় নয় ধনীরাও ভুগছে পুষ্টি শূন্যতায়।

স্বাদ আর পুষ্টির মধ্যে সব সময় সাধের প্রাধান্য থাকে সবচেয়ে বেশি। পুষ্টির অপূর্ণতা আর ভেজাল খাবারে কারণে ঝুঁকিতে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। তাই এবারের খাদ্য দিবসে বার বার উঠে আসছে খাদ্যের নিরাপত্তার কথা।

এএইচ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর