কখনও কখনও পায়ে হাটার গতির থেকেও কম ঘোরে গাড়ির চাকা। এক সিগনালেই থমকে থাকতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কোথাও রাস্তা আটকে দাবি আদায়ের চেষ্টা আবার কোথাও কার আগে কে সিগন্যাল পার করবে সেই প্রতিযোগিতা। এ যেন এক স্বেচ্ছাচারিতার সড়ক রাজধানীতে।
দায়িত্বে থাকার কথা যাদের তারাও ভীত সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনায়। তাই অনেক সময় সড়কের গাড়ির মালিকরাই রাস্তা খুলে পার করছেন ব্যক্তিগত গাড়ি।
একজন গাড়ির মালিক বলেন, ‘পুলিশের করার কথা, তারা হয়তো এই রোদে একটু বিশ্রাম নিতে গেছে, আবার চলে আসবে। আমি এখানে স্বপ্রণোদিত হয়ে দায়িত্বটা পালন করলাম।’
এমন অবস্থা কেন? দায়িত্বশীল ট্রাফিক পুলিশরা কি করছে?
একজন ট্রাফিক পুলিশ বলেন, ‘নিজের কাছে তো আমরা দুর্বল আছিই। এটা আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে। আমাদের মন মানসিকতা এখনও ১০০ ভাগ ঠিক না।’
সড়কের আউন ভঙ্গ করলে নেই মামলা দেয়ার নির্দেশনা। তাই বসে সময় কাটাচ্ছেন অধিকাংশ ট্রাফিক পুলিশ। শুধু দু'একজন নিয়ন্ত্রণ করছেন ট্রাফিকের দায়িত্ব। আর এই সুযোগেই স্বেচ্ছাচারিতা করছে সবাই।
রাজধানীর অধিকাংশ সিগনালের একই অবস্থা। কোথাও এক জন আবার কোথাও দুই থেকে তিন জন চার রাস্তার ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছেন।
যারাও রাস্তায় আছেন তাদের অধিকাংশই কনস্টেবল। সার্জেন্ট র্যাংকের অফিসারদেরও খুব একটা খুঁজে পাওয়া যায় না রাস্তায়। যাদের পাওয়া গেলো তারাও আতঙ্কিত।
একজন সার্জেন্ট বলেন, ‘আমি অবশ্যই আতঙ্কিত আছি। কিছুটা শঙ্কা এখনও রয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী এখন আমি আমার সিনিয়রদের সাথে রেখে কাজ করছি। সময়ের প্রেক্ষিতে ঠিক হয়ে যাবে।’
সমাধান কোথায়? ট্রাফিক পুলিশ প্রধান মো. মুবিনুর রহমান জানিয়েছে, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে তারা কাজ করছেন। তবে, সময় লাগবে।
তিনি বলেন, ‘ভীতি কাটিয়ে উঠতে পেরেছে বলেই আমরা তাদের কাজে ফিরিয়েছি। যদিও আমরা নিরস্ত্র। ট্রাফিক পুলিশ সাহসের সাথে রাস্তায় কাজ করছে। আইনের দিকে না গিয়ে তারা মানুষকে বুঝিয়ে রাস্তায় শৃঙ্খলা ফেরানোর কাজ করে যাচ্ছে।’
মেট্রোরেল চালু হলে সড়কে কিছুটা স্বস্তি ফিরবে, সাথে ফেরাতে হবে ট্রাফিক পুলিশের মনোবল। আইনের প্রয়োগ ও কৌশলই পারে রাজধানীবাসীদের এই সমস্যা থেকে সমাধান দিতে।