ময়মনসিংহের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী কামরুল হাসান, স্ত্রীকে নিয়ে চাল কিনতে আসেন নগরীর চালের দোকানে। এক দোকান থেকে আরেক দোকানে ঘুরে চেষ্টা করেন কিছুটা কম দামে চাল কিনতে। কিন্তু দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় হিসাব মিলছে না তার। নিত্যপণ্যের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধির মাঝেই চড়া চালের বাজার যেন মরার উপর খাড়ার ঘা।
কামরুল হাসান বলেন, 'আমাদের নির্দিষ্ট একটা বেতন থাকে, সে বেতনের ওপর নির্ভর করেই আমরা সারা মাসের বাজেট করি। যখন হঠাৎ করে চালের দাম দুই থেকে তিন টাকা বেড়ে যায় আমরা হিমশিম খাই।'
জেলার পাইকারি ও খুচরা দোকানে কেজিতে চালের দাম বেড়েছে দুই থেকে চার টাকা পর্যন্ত। পাইকারি বাজারে বিআর-২৮, ২৯ ও ৪৯ জাতের চালের কেজি ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা, নাজিরশাইল ও কাটারি ৬৮ থেকে ৭০ টাকা ও মানভেদে চিনিগুড়া, কালোজিরা সুগন্ধি চাল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। খুচরায় যার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে আরও তিন থেকে চার টাকা।
একজন ক্রেতা বলেন, 'বাজারে চালের সরবরাহ অনেক আছে। তারপরও চালের দাম দিন দিন বাড়ছেই। এতে আমরা অনেক হিমশিম খাচ্ছি। সাধারণ মানুষের জন্য ইনকাম করে খাওয়াটা অনেক কষ্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে।'
বিক্রেতারা বলছেন, চালের দাম বৃদ্ধি এবং সাম্প্রতিক নানা কারণে বিক্রি কমেছে। এর মধ্যে ধানের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে মিলাররা চালের দাম বাড়িয়েছেন।
একজন চাল বিক্রেতা বলেন, 'কিছু চাল দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে। ধানের দাম বেশি হওয়ায় এই দাম বেড়েছে। এছাড়াও দূরপাল্লার ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় এই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের থেকে মিলাররা দাম বেশি নিচ্ছে,ি সেজন্য আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।'
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বলছেন, ওএমএস ও টিসিবি'র মাধ্যমে কম দামে চাল বিক্রি করা হচ্ছে। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৫ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রিও শুরু হবে। সরকারের এসব উদ্যোগে বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে মনে করেন তিনি।
ময়মনসিংহ'র জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আব্দুল কাদের বলেন, 'টিসিবির মাধ্যমে আমাদের ময়মনসিংহ জেলায় প্রায় ১ হাজার ৬০০ মেট্রিকটন চাল স্বল্পমূল্যে ভোক্তাদের মাঝে বিক্রি করছি। আমাদের ওএমএস, টিসিবি ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি দাম কমাতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।'
এদিকে বাজারে মণপ্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বাড়ায় বিআর-২৮, ২৯ ধান ১ হাজার ৩৮০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায় এবং চিকন জাতের কাটারি ১ হাজার ৫০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে বলে জানান মিলাররা।